আমরা সেইরকম নাস্তিক,
মাটির মূর্তি ভেঙে ফেলি অবজ্ঞায়, অশ্রদ্ধায়,
যেমনটি ভেঙেছিলো প্রাচীন হানাদারেরা,
সোমনাথে, বামিয়ানে, নালন্দায়।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
পৌত্তলিকতা মানি না, তবে
বিদেশী শাসকের নৃশংসতার মূর্তিতে
আনুগত্য দেখাই মুঠি পাকিয়ে,
মানিনা, তবুও সে রাজা খান খান হলে
কালি লেপে দেই পিতৃপুরুষের মুখে।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
সাম্যবাদ মনে মানি আর না মানি,
সেই লক্ষ্যে কিছু করি আর না করি,
নিজেদের অর্ধকুম্ভ জ্ঞানের প্রমাণ দিতে
হাজির করি ভিনদেশের ভ্রান্ত তত্ত্ব
গেঁয়ো যোগীরা ভিখ না পেয়ে ফিরে যান ব্যর্থ নমস্কারে।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
দেশপ্রেমের নজির দিতে দ্বারস্থ হই
চে-র, মাওয়ের, স্তালিনের আর
অবসরে ছিদ্রান্বেষণ করি
অরবিন্দের, রবীন্দ্রের, সুভাষের ও
আরো অসংখ্য প্রণম্যের,
যাঁদের কাছে ঋণী আমাদের ঠুঁটো অস্তিত্ব।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
খোদা না মানলেও খোদকারী করি সগর্বে
আর নিজেদের স্বার্থসর্বস্ব নিষ্কৃয়তার
দায় চাপাই অদেখা ঈশ্বরের কাঁধে।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
রামচন্দ্র কে অস্পৃশ্য গেরুয়া ভাবি
আর অকালবোধনে উদ্বাহু হয়ে উৎসবে মাতি।
আমরা সেইরকম নাস্তিক,
আমরা আগাগোড়া নাস্তিক,
আমরা পুরোদস্তুর নাস্তিক, কারণ
আমাদের কোনও অস্তিত্বই নেই!
আমরা মৃতজন্মা, ঝাঁকের কই
আমাদের কোনও ঐতিহ্য নেই, দর্শন নেই, সংস্কৃতি নেই,
আমরা কাউকে শ্রদ্ধা করতে শিখিনি,
ফলে কারো কাছে শ্রদ্ধা পাইওনি
আমরা এভাবে প্রতিনিয়ত নিজেকেই
একটু একটু করে নীচে নামাচ্ছি, আর
পরানুকরণের মোহে আত্মবিস্মৃত হয়ে
না মরে টিকে আছি।