বাস্তবতার লোনাজলে সাতরিয়ে ক্লান্ত আমি-
আজ না হয় ভাসি কল্পনায়- নীল তিমির পাখায় চড়ে।
সাগরে জলোচ্ছ্বাস হোক, থরে থরে কেঁপে উঠুক উপকূল।
দ্বীপ দ্বীপান্তরের সহস্র কোটি বালুকণা আকাশে আকাশে
ছড়িয়ে যাক ধূমায়িত কুণ্ডলীর মত- বিক্ষুব্ধ মহাপ্রলয়ে।
জীবন্ত ভেলা আমি শক্ত করে ধরে রাখি বলিষ্ঠ বাহুবন্ধনে,
যেন কোনদিন শেষ না হয় আমার স্বপ্ন খেলা।
শুরু হয় জলকম্পন- রাশি রাশি জলতরঙ্গের প্রবল ঘূর্ণিপাকের
সীমাহীন পরাকাষ্ঠায় পরাভূত জলজ -দিশেহারা দিগ্বিদিক।
বিপন্ন এই আমি খুঁজি আশ্রয় স্বপ্ন ঈগল ডানায়।
আমাজানের গভীর অন্ধকারে হারিয়ে ফেলি চোখের দৃষ্টি।
তবুও স্বপ্নালোকের উজ্জ্বল আভায় খুঁজে পাই আমার আবাস।
কোন এক অজানা অচেনা বৃক্ষের মৃত্যুপুরীসম কুঠুরিতে।
ঘড়ির কাটার মত চঞ্চল কল্পনা উটের পিঠ থেকে লাফিয়ে পড়ে
বনে যায় আলোর বেগে চলমান কোন মহাশুন্যযানের নভোচারী।
ছায়াপথ বেয়ে বেয়ে বিচরণ করে নক্ষত্র থেকে নক্ষত্রে।
কৃষ্ণগহ্বরের মুক্তিবেগ ছাড়িয়ে যায় এই মুক্ত সুত্রবন্ধন।
গ্রহ গ্রহান্তরে দিকভ্রান্তের মত ছুটে চলে অনির্ণেয় আকাঙ্ক্ষায়
মহাকাশে ছিটিয়ে দেয় নতুন নক্ষত্রের বীজ।
কাঙ্ক্ষিত গ্রহের জন্ম প্রতীক্ষায়-
পরিশ্রান্ত হয়ে ঘরে ফিরে অতৃপ্ত আমার কল্পনা
কোলাহল ভরা এই সমতলভুমির আর দশটি চোখের মত স্বপ্ন দেখে।
ট্র্যাফিক সিগন্যালের লাল বাতিটাকে রক্তজবা ভাবতে কষ্ট হয়।
স্বপ্ন দেখে ফুল স্পীডে চলমান কোন বাসের চাকা।
সহস্র-কোটি বায়ুকনার মত ঘিরে রেখেছে চাহিদার বলয়।
তাই এখন আমার কল্পনার বিচরণক্ষেত্র শুধু-
দুপুরের কড়া রোদে একটু শীতল প্রশান্তি পরশ।
একটি কোন আইসক্রিম কিংবা শাঁসমুক্ত ডাবের অমৃত জল
ফুটপাতে দাঁড়ানো আঁখমেশিনে গড়িয়ে পরা বরফমেশানো আঁখের রস।
জর্জরিত শরীর বিছানায় এলিয়ে দুফোঁটা রাতের নিদ্রা
মধ্যরাতে কোন তরুণীর অস্ফুট মুখের প্রতিচ্ছবি
যার চোখের দৃষ্টিতে রংধনু আঁকা নেই শুধু আছে
বালিশের তুলার মত একচিলতে মেঘ উপেক্ষিত শরতের নীলাকাশ।