আমি ফিরে যেতে চাই, শিকড়ের টানে প্রিয় মায়ের মাটির দেশে
হয়তোবা বসন্তের কোকিল হয়ে কিংবা ফাল্গুনের শিমুল-পলাশের বেশে
প্রাণ জুড়াতে চাই, বটের ছায়ায় বসে, রাখালিয়া বাঁশরীর কলতানে
যেখানে শান্তির সুভাষ বহে, হর্ষে উড়ে যায় মুক্ত পাখিরা দলে দলে
আমি বুক ভরে নিতে চাই, ফাল্গুনের মুকুলিত সেই পুস্পের সুঘ্রাণ
আমি ভ্রমর হয়ে হারাবো ফুলের দেশে, আহরিব অমৃত সুধা পাণ
আমি পাল তোলা নৌকায় বসে, শুনবো মাঝির দরদী কণ্ঠের গান
আমিও গাইব বাউলিয়া, ভাটিয়ালী গা্ন, তৃষিত হবে এ মন প্রাণ
আমি হারিয়ে যেতে চাই, ওই নিভৃত বনানীর গহীন প্রান্তরে
আমি বিলীন হতে চাই, এই স্বর্গভূমির ভালোবাসা নিয়ে অন্তরে
আমি নয়ন ভরে দেখতে চাই, বঙ্গভুমির অপরুপ রুপের শোভা
নৈসর্গিক দৃশের লীলাভূমি এ দেশ আমার, শত রুপে সে যে অপুরুপা
আমি রিমঝিম শব্দে পুলকিত সমীরণে শুনিতে চায় বৃষ্টির সুমধুর গুঞ্জন
আমি বর্ষার থৈ থৈ জ্বলের মৃদঙ্গের তালে, উথালি-পাথালি করবো এই মন
আমি ভোরের সকালে কুয়াশা ভেজা ঘাসের পাতায় হব শুভ্র শিশির
আমি গোধূলি লগ্নে নীড়ে ফেরা পাখির মত খুঁজে নিব আপন সুখের নীড়
আমি নগ্ন পায়ে পথ পেরিয়ে যাব শহীদ মিনারের প্রভাত ফেরীর মিছিলে
আমি বিনম্র চিত্তে হাজারো ফুলের ডালি সাজিয়ে, দেবো শ্রদ্ধাঞ্জলি ঢেলে
আমি ফিরে যেতে চাই, বাংলার মেঠো পথ ধরে, ওই দূর দিগন্তের গাঁয়ে
হয়তবা একতারা হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো আজানা পথের বাঁয়ে
আমি ফিরে যেতে চাই আমার শৈশবে, সেই যে গাঁয়ের দুষ্ট ছেলেদের দলে
কাঁদা মেখে করবো খেলা, ভাসাবো ভেলা ইছামতীর ঘোলা জলে
আমি ফিরে যাব শতবার ওই সবুজে ঘেরা সোনা ফলানো মাটির দেশে
শিকড়েরে টানে এই মাটিকে ভালবেসে বাঁচিতে চাই একসাথে মিলে-মিশে ।।