সবুজে ঘেরা বৃক্ষরাজি, ছোট্ট মোদের গ্রামখানি
গ্রামের পাশেই বয়ে গেছে ইছামতী গাঙ্গের পানি
ছোট্ট ছোট্ট তিনটি পল্লী, হাতে গুনা আমরা কজনই
সুখে-দুঃখে, হাসি-কান্নায়, কাটে মোদের দিবস-রজনী
ভোর হলেই শুভ্র সমীরণে, মুখরিত হয় পাখির কলতানে
বৃদ্ধ-জোয়ান শয়ন ভেঙ্গে, পায়ে হেঁটে যায় প্রভুর গৃহের পানে
সকাল সকাল গ্রামখানিতে, নিত্য-সামগ্রীর বাজার বসে
নারী-পুরুষ সবাই মিলে, সদায় কিনে দাম-দর কষে
দুপুরের ওই তপ্ত রোঁদে, নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত সবে
পেটের দায়েই সবাই খাটে এটাই নিয়ম এইতো ভবে
আঁকা বাঁকা মেঠো পথে, গায়ের বধূ কলসি কাঁখে
জল ভরিতে যায় পায়ে হেঁটে, পুকুর ঘাঁটে, নদীর বাঁকে
বর্ষা এলে খালে-বিলে, চারিদিকে যায় পানিতে ভরে
মেঘে ঢাকা গগন গর্জে, অঝোর ধারায় শ্রাবণ ঝরে
সবুজে ভরা ধানের ক্ষেতে, বাতাস দোলে ধানের শীষে
কি নিদারুণ দৃশ্য দেখতে, প্রাণ যে সেথায় জুড়ায় এসে
শীত এলেই ঘরে ঘরে, খুশীর আমেজ যায় যে বেড়ে
কত আয়োজন হয় চারিদিকে, বড়দিনের আনন্দ ঘিরে
শীতের শেষে বসন্ত আসে, গাছে-গাছে কোকিল ডাকে
থোকায় থোকায় ফুল ফুটে, সবুজ পাতার শাঁখে শাঁখে
বিকেল হলেই গ্রামের মাঝে, কি অপরূপ রূপে সাঁজে
বিলের ধারে মধুর সুরে, বংশী বাদকের বাঁশি বাজে
গোধূলি-লগ্নে নিজ নিজ নীড়ে, সবাই যায় ঘরে ফিরে
বৃদ্ধ-যুবারা চায়ের কাপে, আড্ডায় মাতে দোকান ঘিরে
রাত্রির হলেই আঁধার কালো, জ্বলে জোনাকির মৃদু আলো
নিঝুম রাতে চাঁদের আলো, দেখতে লাগে বিষণ ভালো।।