সেদিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলাম,
দেহ ক্লান্ত, মন বিষন্ন লাগছিলো
কিছুই যেন ভালো লাগছিলো না আর
যেন বাড়ি না গেলেই ভালো হয়
মিনিট কুড়ি অপেক্ষার পর একটা বাস পেলাম
বাসে তিল ধারণের ও জায়গা ছিল না
অতি কষ্টে বাসে উঠে লেডিস সীটের কাছে দাঁড়ালাম
কিছুক্ষণ পর বসার একটা সীট পেলাম
আরো কিছুক্ষণ পর বাসে এক ভদ্র লোক উঠলেন
কোলে ছোট্ট একটি শিশু, মাস দুয়েকের হবে বোধ হয়
পিছনে একটি মহিলা উঠলেন, হাত ধরে একটি ছোট্ট মেয়ে
লোকটি ভীড় ঠেলে আমার সীটের সামনে এসে দাঁড়ালেন
ওনার স্ত্রী ভীড়ে পেছনে রয়ে গেলেন
অন্য দিন এরূপ ঘটনায় সীট ছেড়ে দিই
কিন্তু আজ আর ইচ্ছা করলো না
কিছুটা ক্লান্ত শরীর, কিছুটা ভীড়ের দিকে তাকিয়েই
আর কিছুটা বা লোভে পরেই
শিশুটিকে আমার কোলে চেয়ে নিলাম
পিছন থেকে মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো
আমিও হাসলাম, চোখ দিয়েই সান্তনা দিলাম তাকে
যে তার সন্তানকে ঠিক রাখব আমি
শিশুটির দিকে তাকালাম একবার
কোথায় দৃষ্টি তার কে জানে?
তার বুকের ওপর আলতো ভাবে হাতটা রাখলাম
কী ছোট্ট দেহ, কে জানে ছেলে না মেয়ে?
শিশুটি তার ছোট্ট হাত আমার একটা আঙ্গুল ধরলো
শরীরে একটা অদ্ভুদ শিহরণ অনুভব করলাম
শিশুটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখ ঝাপসা হয়ে গেল
সবার অলক্ষ্যে শিশুটিকে আর একটু জাড়িয়ে ধরলাম
শিশুটি আমার বুকে মুখ গুজে কী যেন খুঁজতে লাগল
হয়ত ক্ষিদে পেয়েছে, হয়ত বা ঘুম, কী জানি
হয়ত বা আবার আমাকে ওর মা ভেবেছে
জীবনে এই প্রথম মাতৃত্বের স্বাদ পেলাম
মা না হওয়ার যন্ত্রণা এক মুহুর্তের জন্য হলেও
মুছে গেল এ জীবন থেকে...