স্বপ্নপুরী: হোটেল ডি গ্লেস
--সুহেল ইবনে ইসহাক
বরফের নিচে ঢাকা পড়ে আছে কানাডার আলবার্টা থেকে অন্টারিও।
তুষারঝড়ে বিপর্যস্থ কানাডা।
বিমানবন্দরগুলো যেন পরেছে বিধবা পোশাক।
তুষারে সাদা হয়ে আছে সব, তুষারসমেত ঝোড়ো বাতাস,
রাস্তাঘাট ঢেকে আছে বরফে।
ভবিষ্যৎহীন বরফ, ভরা অতীত,
পাথরের মতো ভাবলেশহীন, হর্ষ-বিষাদ মিলনের আকাঙ্ক্ষায় কাতর,
কখনো মানুষের মতো রোমাঞ্চকর!
নীল আকাশে খন্ড খন্ড সাদা মেঘ ছুঁয়ে যাচ্ছে
কোনো কোনো পাহাড়ের বরফের টোপর পরা চূড়া!
রোদের মোড়কে জ্বলজ্বলে দিন।
এতোদিন ছবিতে দেখেছি রকির এই রূপ,
আজ তা চোখের সামনে চলমান, অভিভূত…!
প্রকৃতির বিশাল ক্যানভাসে সৃষ্টিকর্তার সে এক অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল চিত্রকর্ম!
লেকের জমাটবদ্ধ বরফের ওপাড়ে শুভ্র মুকুট পরা
ভিক্টোরিয়ার ঠিঁকড়ে পড়া রূপ রীতিমতো মাতাল করে তুললো।
রোদের স্পর্শ সে রূপের চমক বাড়িয়েছে যেনো আরো সহস্রগুণ।
কেমন যেনো একটা সুরেলা আকর্ষণ আছে;
আছে হ্যামিলনের বংশীবাদকের বাঁশির সুরের মতো
পর্যটকের কানে মধুবর্ষণ করা একটা মোহনীয় সুর।
হৃদয়তন্ত্রীতে ছড়িয়ে দেয় পরম ভালোলাগার পরশ।
পাহাড়ের সৌন্দর্য আর সে সুরের মূর্চ্ছণায় ইচ্ছে করে
দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজেকে নিবিড় করে সঁপে দিতে।
হোটেল ডি গ্লেস! স্বপ্নপুরী!
বরফের হোটেলের বিছানা, টেবিল, চেয়ার,
এমনকি বাথরুমও শুভ্র তুষারের অপূর্ব সৃষ্টি।
হোটেলের দেয়াল ও ছাদে থাকে চমৎকার বরফের নকশা।
এসবকিছুর সঙ্গে শুভ্র বরফের গায়ে থাকে নানা রঙের আলোর ঝলকানি।
পুরো কানাডা যেনো একটা সৃষ্টিকর্তার সুনিপুণ তুলিতে আঁকা
বিশার ঝকঝকে একটি নিখুঁত ছবি।
রচনা কাল: ১০ জানুয়ারী ২০২০,টরন্টো, কানাডা।