অনাবৃত বিরহ
---সুহেল ইবনে ইসহাক
নত হয়ে থাকা গাছের পাতাগুলো দেখে আরও বেশি মনে হলো
ঝরাপাতার মতো ঝরে যায় আমাদের প্রতিটি দিন,
যা কখনও ফিরে আসে না I
একটা গোলাপ পাঁপড়ি আর কিছু নোনা জল ।
আজো জমা আছে ডায়রির পাতায় I
উঠান শিমুলের লাল ফুলে ভরে গেছে,
গাছে গাছে পাখিদের মহোৎসব,
গতকাল সন্ধ্যাবেলা অশ্বত্থের তলায় বাতি আর ধূপধুনার মধ্যেই
অদ্ভূত স্বরে ডেকে উঠল পেঁচা !
আকাশ বললো, “আজ অনাবৃত হয়ে গেছি, মেঘের ঢাকনা আর নেই”
মেঘকে পাঠিয়েছিলাম আষাঢ়ের প্রথম দিবসে পত্র দিয়ে,
কিন্তু সে তো আর ফিরে এলো না,
পাহাড়ের চুড়ায় বসে বৃষ্টি ঢেলে চলেছে।
এখন প্রায় প্রতি রাতেই কান্না পায়,
তুমি শুনলে মনে করবে তোমায় পাইনি বলে,
আসলে তা নয় I
কান্না পায়, তুমি সুখে নেই বলে I
আগে যখন চোখ বন্ধ করে তোমায় ভাবতাম,
তখন দেখতাম তুমি সুখের রানী, রূপের রানী, অপরূপা সুন্দরী I
আর এখন চোখ বন্ধ করলে দেখি, তোমার চোখে জল ।
তোমার দেহখানি মলিন, তাই আমি নয়ন জলে ভাসি,
তখন কষ্ট গুলো আছড়ে পড়ে বুকের মাঝে রক্তনালী জুড়ে I
কোথাও একটা কোকিল ডেকে উঠল,
ধুক করে উঠল বুকের ভেতরটা,
কোকিলের সুরটা আজ কী বিরহ-কাতর মনে হলো !
প্রতিনিয়ত ধ্বনিত হওয়া সেই মর্মসুর ছড়িয়ে যায় সবখানে I
ওদিকে মন খোলে কাঁদতে না পারা কষ্ঠের আকাশ I
এই শুকনো ভাদ্রে এসো আমরা মিলনের বদলে অনাবৃত বিরহের গান গাই।
সেই গানের সুরের ধারায় যেন বর্ষাধারা নামে।
সময়টা খুব কঠিন, যে সময়ে চোখের পানি ফেলতে হয়।
কিন্তু ওই সময়টা তার চেয়েও অনেক বেশি কঠিন,
যে সময় অনাবৃত বিরহে চোখের পানি লুকিয়ে হাসতে হয়।
আজ তাই কঠিনেরে ভালোবাসিলাম II
রচনাকাল : ২৪ জানুয়ারী ,২০১৮, টরন্টো কানাডা I