শ্রদ্ধেয় কবি কবীর হুমায়ূন ভাইয়ের "জেসমিন" শিরোনামের কবিতাটি পাঠ করে মুগ্ধ হলাম । বিশেষ করে কবিতার শেষ চারটি চরণ হৃদয়ে দাগ কাটলো। ফুল নিয়ে যেকোনো ছড়া, কবিতা, গান, রচনা সর্বদাই অনবদ্য যেমনটা " জেসমিন" ।
ফুল পরহিত ব্রতে উৎসর্গীকৃত জীবনের সার্থক প্রতিনিধি। সে কখনাে তার নিজের প্রয়ােজনে আসে না ।
"শুভ্র সাদা সুগন্ধময় অতি,
পুষ্পপ্রেমিক ভ্রমর পাগলপারা। "
ফুল হলো সৃষ্টিকর্তার সুন্দরতম সৃষ্টি, যা পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তোলে। উপরোক্ত চরণদুটিতে ফুল যে সুন্দরের প্রতীক, আর মানুষ মাত্রই যে সুন্দরের পূজারী -এই বিষয়টি খুব সুন্দরভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে, যা কবিতার মূলভাবকে প্রথমেই পাঠকমহলে তুলে ধরতে সাহায্য করেছে।
"গন্ধ ছড়ায় আনন্দ পায় সবে,
ফুলের মতো জীবন গড়ে যাও।"
চমৎকার উপদেশবাণী,পরের উপকারে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়াতেই জীবনের সার্থকতা।ফুল গাছে ফুটে চারদিকেগন্ধ ছড়ায়,সৌন্দর্য বিলিয়ে ঝরে পড়ে। সে কখনাে নিজের জন্যে ফোটে না, অন্যকে আকৃষ্ট করতে, মুগ্ধ করতেই ফোটে। এতেই ফুলের সার্থকতা মানবজাতির উচিত ফুলের এ কল্যাণকর ব্রতকে নিজের জীবনের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করা। নিজের স্বার্থকে বড় বলে বিবেচনা না করে অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়ােজিত করতে পারলে জীবনের উদ্দেশ্য সফল হয়। এর মাধ্যমে জীবনের প্রকৃত অর্থ ও সুখ খুঁজে পাওয়া যায় ।
কোনো ফুল কখনোই অন্য ফুলের সাথে নিজেকে তুলনা করে না। প্রত্যেকে তার নিজস্ব উপস্থিতি এবং সৌন্দর্য উপভোগ করে। আমাদের মানুষের জন্য এখানে জীবনের শিক্ষা রয়েছে।
মানুষ যেদিন ফুলের আদর্শ ভেবে পরের কল্যাণে জীবনকে বিলিয়ে দিতে পারবে সেদিনই সমাজ জীবনে দুঃখ যন্ত্রণা বৈষম্যের অবসান হবে। মানুষের জীবন হয়ে উঠবে আনন্দময় ও কল্যাণময় তাই মানুষকে ব্যক্তি স্বার্থের কথা না ভেবে সবার স্বার্থের কথা ভাবতে হবে।
"মানুষ জীবন এমন হলে, তবে,
পৃথিবীতে নামবে স্বর্গটাও।"
তাই আমাদেরকে "ফ্লোরিকালচার" বা ফুলের অধ্যয়নে মনোনিবেশ করা আবশ্যক।