কে তুমি?

           প্রশ্ন তুলেছিলে গ্রীষ্মের রুদ্র ভৈরবের তপ্ত দুপুরে।

কি বা পরিচয়!

                    অনিমেষ দৃষ্টি হাজার ব্যাঞ্জনায় ব্যাকুল হয়েছিল মোর শুষ্ক আননপানে।

কোন কুল গোত্র জাত?

                নীরব প্রকাশ স্তম্ভিত করেছিলো গোধূলিতে ছেড়ে যাওয়া দিনের শেষ আলোর মাঝে।

               আমি সেই, হাজার অব্যাক্তের প্রকাশ।

সেই আমি,

                নিদ্রা হতে জেগে ওঠা হাজার পাখির গান।

               দিনের সখার কিরণ ধারার চেনা খেলার সাথি।

              তপ্ত আলোয় দগ্ধ হওয়া হাজার চাঁপার শ্রম

              নিত্য যা ঝরবে পরে সন্ধ্যায় অবিরাম।

বৈশাখের প্রথম প্রকাশ পুরুষ তোমার কঠিন বিকাশ

দিনের ডালায় সকল ফুল দিলে উজাড় করে।

সেই যে আমি বিষাদিনী,শ্রাবন রাতে নীরবে কাঁদি

অশ্রুধারা বন্যা হানে নেই তো কেউ বাঁধ বাঁধার রে -

মেঘের বুকে মেঘ ছুঁয়ে যায় চাঁদের আভায় নীল নীলিমায়

তখন আমি ব্যাকুল হয়ে কাঁদি ব্যাকুল নয়নে।

ওই যে দেখ সোনার আভা ঢেউ খেলেছে কাশের বনে

ওই তো আমি শিউলি বোটায়, ঘাসের শিরে শিশির কনায়।

            এই যে আমি নামহীন বনের বনলতা।

ওই তো আমি,

             শীতের হাওয়ায় ঝরা পাতার গান।

বাউল বলে, 'তোমার পরিচয় নরম রোদের তাল।'

এই যে আমি দিব্য আছি,

শীতের রাতে উষ্ণতা হয়ে জড়িয়ে তোমায়।

এবার কি পেলে তুমি মোর পরিচয়?

ফাগুন নিশি মধুর প্রিয় থাকি যখন দখিণ হাওয়ায়

বাঁধা থাকি পলাশ মালায় তোমার খোলা চুলের শোভায়।

তোমার গান, তোমার বাণী, তোমার সুরে মুক্তি হানি

এই তো আমি বসন্তে নব বাসন্তিকা।