“নীরব শুন্যতা”
সবথেকে নিরাপদ; পবিত্র; আরামদায়ক পরিবেশ একমাত্র মাতৃগর্ভ!
গুটি গুটি করে মাতৃগর্ভে বাড়তে থাকে ছোট্ট একটি প্রাণ।
কতোই না সুখের সেই মুহূর্তগুলো মাতৃগর্ভে।
নেই কোন দুশ্চিন্তা; শুধুই আনন্দ আর আনন্দ!
দশ মাস পরে আঁখি মেলে দেখে এই কঠিন ধরিত্রী।
মাতৃগর্ভের মতোই ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখে ছোট্ট সন্তানটিকে।
আধো আলো বুলি আর গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে শিখে যায় নিষ্পাপ শিশুটি।
মায়ের সীমাহীন ভালবাসার ছায়ায় সেই ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটি;
এসে পৌঁছায় বয়ঃসন্ধিকালে।
সেই সময়ে সবকিছু নতুন লাগতে থাকে সন্তানটির আঁখিতে।
নিজেকে বড় বড় লাগে; মনে হয় মুক্ত পাখি।
মন মানতে চায় না কোন শাসন; বিধি-বিধান আর হাজারো নিয়মের বেড়াজাল।
হোক সচেতন কিংবা অবচেতন মনে; জন্মধাত্রি মা কে অসহ্য লাগে এই বয়ঃসন্ধিকালে!
হাজারো কটু কথা উচ্চারিত হয় সন্তানটির দ্বারা।
তবু মা সকল ভালবাসার বন্ধন আর ছায়া হয়ে আগলে রাখেন সর্বদা সন্তানকে;
বিপদ্গামী হয়ে যায় এই ভয়ে!
বিপদের আশঙ্কা পেলেই মা আরো বেশি স্নেহময়ি হয়ে আগলে রাখতে চায়।
সন্তান মাকে ভুল বুঝে ভালগার আপন পথকেই অনুসরণ করে;
মা তখনও ঝাপটে রাখতে ব্যস্ত সন্তানকে।
যতদিন যায় বয়ঃসন্ধিকালীন সন্তানটি আরো বেশি অবাধ্য হয়ে উঠে।
ধীরে ধীরে মায়ের মনে জন্ম নেয় নীরব শূন্যতা।
সেই শুন্যতা নিয়েও সন্তানের মঙ্গল কামনা করে চলে দিনরাত সৃষ্টিকর্তার কাছে!
কেননা সে যে তার নাড়ি ছেড়া ধন।
সেই মা নীরবে কেঁদে যায় সন্তানের থেকে পাওয়া এমন কটু উক্তিতে।
মা যে ব্যর্থ হয় বুঝাতে সন্তানটিকে-
“আমি তোর মা; আমি কখনো তোর খারাপ চাইতে পারি না”!
সময়ের সাথে সাথে মায়ের বয়স বাড়তে থাকে;
একটু একটু শারিরিকভাবে দুর্বল হয়ে যায়।
সেই রুগ্ন শরীর নিয়েও মায়ের আঁখি দুটি খুঁজে ফিরে তার সন্তানকে; সন্তান যে ফিরেও চায় না মায়ের দিকে।
অশ্রুসিক্ত আঁখি দুটি!
নীরব শুন্যতা হাসিমাখা ঠোঁট দিয়ে হৃদয়ের গভীরে গোপন রেখে আঁখিদুটি বন্ধ করেন মা।
শুধু পড়ে থাকে নিথর দেহ; থাকে না কোন অভিমান আর নীরব শুন্যতা।
হে! নবজাগরণে উজ্জীবিত বয়ঃসন্ধিকালীন সন্তান-
মার ভালবাসা একমাত্র সীমাহীন ভালবাসা।
জন্মধাত্রি মায়ের হৃদয়ে জমতে দিয়ো না নীরব শুন্যতা!