“পূর্ণিমায় নবজাতকের মৃত্যু”
রাতের আকাশের বুকে পূর্ণিমার স্নিগ্ধ আলো; প্রদীপের আলোয় আলোকিত আঁধার ঘর!
বাহিরে বইছে হিমেল বাতাস; সন্ধ্যা তখন ঘনিয়ে রাত দশটা ছুঁই ছুঁই করছে।
বারান্দায় আরামকেদারায় বসে চায়ে চুপুক দিতে দিতে পড়ছিলাম প্রেমের উপন্যাস;
চাঁদের স্নিগ্ধ আভা আমায় নিয়েছিল জড়িয়ে তার স্নিগ্ধ ভালবাসায়!
হঠাৎ মোবাইলের ফোন এলো; কিছুটা বিরক্ত লাগছিল এমন মুহূর্তের ছন্দপতন হবার জন্য।
বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরলাম; ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে খবর এলো দ্রুত হাসপাতালে যাবার।
পেশায় আমি একজন ডাক্তার; মানুষের সেবা করাই আমার ধর্ম।
ছুটে গেলাম হাসপাতালে; একজন গর্ভবতী মায়ের সন্তানকে ধরিত্রীর আলো দেখাবো বলে।
তিনি ছিলেন আমারি তত্ত্বাবধানে; নিয়ে যাওয়া হলো অপারেশন কক্ষে।
অপারেশন শুরু হবার সাথে সাথে মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে লাগলো।
অক্লান্ত পরিশ্রমের পর মায়ের প্রাণ বাঁচাতে পেরেছিলাম।
তবে আমি প্রস্তুত ছিলাম না এমন একটি ঘটনার সাক্ষী হবো;
নবজাতকটি ছিল প্রাণহীন।
কিভাবে নিজেকে সামলাবো বুঝতে পারছিলাম না;
আমারি হাত ধরে আসতে চলেছিল ধরিত্রীতে।
তাহলে কেন সেই নবজাতকের মাঝে প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল সৃষ্টিকর্তা।
কিছুক্ষণ আগের পূর্ণিমার প্রেমমুহূর্ত ঢেকে গেলো দুঃখের কালো মেঘের আবরণে!
শিশুটি দেখতে খুব মিষ্টি হয়েছিল; আমার সারা শরীর অবশ হয়ে এলো।
নিজেকে হৃদয় থেকে খুনি খুনি লাগছিল; জানিনা কখন চেতন হারালাম।
চেতন ফিরতেই কানে ভেসে এলো সেই মায়ের সন্তান হারাবার কান্না!
“পূর্ণিমায় নবজাতকের মৃত্যু” আমার হৃদয়ে আজো নাড়া দিয়ে যায় দুঃখের অসহনীয় যন্ত্রণা।
সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থনা সেই মায়ের কোল পূর্ণ হোক ভালবাসায় পূর্ণিমায়;
পূর্ণিমার রাতে নবজাতকের কান্না নিয়ে আসে যেন সেই মায়ের আঁখিতে আনন্দ অশ্রুজল!