“কাছে থেকেও দূরে”
নিস্তব্দ রাত!
নেই কোন কোলাহল শুধু কানে ভেসে আসছে ঘড়ির টিক টিক শব্দ।
সেই রাতে নিঃশব্দে আমার ভেতরের ছোট্ট প্রাণটার হ্রদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছিলাম;
আলতো করে নিজের পেটে হাত রেখে আদর করে দিলাম আমার ছোট্ট প্রাণটাকে।
মনের মাঝে সেই এক অন্যরকম অনুভূতি;
প্রহর গুনছিলাম কবে আমার ছোট্ট প্রাণকে দেখতে পাবো?
কবে তুই আধো আধো বুলিতে আমায় মা বলে ডাকবি?
কবে আমায় ছুঁয়ে দিবি তোর কচি কচি হাত দুটো দিয়ে?
এইসব ভাবতে ভাবতে তোর মাঝে গিয়েছিলাম হারিয়ে!
হঠাৎ শুনতে পেলাম বাতাসের শো শো শব্দ;
সে কি ভয়ংকর শব্দ যেন পৃথিবীর সৃষ্টি আজ ধ্বংসের দ্বারে!
তোকে আমার দুটি হাত দিয়ে জাপটে রাখলাম।
তার কিছু পরেই শুরু হলো পেটে অসহ্য বেদনা;
ভাবলাম তুই ভয় পেয়ে তোর ছোট্ট হাত-পা নাড়ছিস।
শুরু হলো আরো অসহ্য ব্যথা।
ব্যথা সহ্য করতে না পেরে কখন যেন অচেতন হয়ে পড়লাম।
যখন আমার চেতন আসে তখন অনুভব করলাম আমি হাসপাতালে।
আমার পাশে আমার সকল কাছের মানুষগুলো দাঁড়িয়ে তবে তারা নির্বিকার।
আমি আমার পেটে হাত দিয়ে অনুভব করলাম তুই পৃথিবীতে এসেছিস আমার কাছে।
খুশিতে আমার আখি অশ্রুসজল; দেখতে চাইলাম আমার ছোট্ট প্রাণটিকে!
বুঝতে পারছিলাম না কেন তারা কিছু বলছে না? কেন তারা নির্বিকার?
তোর বাবা এসে আমার মাথায় হাত রেখে;
নিঃশব্দে কেঁদে ফেললো আর বললো আমায় শক্ত হতে!
তুই যে এসেছিস পৃথিবীতে তবে প্রাণহীন হয়ে;
আমার পৃথিবী ভেঙ্গে চুরমার কালবৈশাখী ঝড়ের ন্যায়!
কেন বিধাতা আমার সাথে এমন করেছিল সেইদিন?
তুই যে আমার এতো কাছে থেকেও দূরে; আমি আজো তোর হ্রদস্পন্দন শুনতে পাই!
তুই আবার কবে আসবি আমার মাঝে?
কবে তোকে আমার কাছে জাপটে রাখবো আমার মাতৃত্ব দিয়ে।