বসে বসে কি যেন ভাবছিল চিত্রার্পিত কাব্য।
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ ---
"চিঠি আছে..... চিঠি ..."
অনেক দিন পর এমন চিঠি পেল সে আজ।
উৎসাহের সাথে কাঁপা কাঁপা হাতে
সুগন্ধি চিরকুটটাকে নীলাভ এনভেলপ্ থেকে মুক্তি দিল সে।
"কি হে ছন্দহীন, এখনও কি কারোর তরে
ঘুরে বেড়াও বুনো হলুদ ফুলের খোঁজে?
এখনও কি পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মন ছুটে যায়
ক্লাসের সবচেয়ে মৃদুবোলা মেয়েটির দিকে?
এখনও কবিতা লেখো, ছন্দহীন,
সেই জোড়া শালিক-- শিশির স্নিক্ত দিন?
এখন অবশ্য সেই শালিক আর নেই;
শিশিরে ভেজা দিন আজ কোথায়!
আমাদের স্কুলের বাগানে
আজও কি ডালিয়া ফোটে?
নিয়ম করে আসো নদীর পাড়ে
তাকে শুধু তাকেই দেখার তরে?
বৃষ্টি কোনো দিন আসে, কোনো দিন আসে না।
তবে, তুমি আসতে চাতক পাখি হয়ে।
এখনও কি ইচ্ছে করে তোমার
আঁকা ছবি গ্রীট করতে হ্যাপি নিউ 'য়ারে?
এখনও কি তারাদের সাথে
ইচ্ছে করে রাত্রি জাগতে?
শোনো, আজ তোমায় একটা গল্প বলি---
মেঘ আর মৃত্তিকা
প্রাণের দোসর যেন একে অপরের।
মেঘ বার বার চাইত মাটিকে,
কিন্তু লজ্জায় একবারও নামেনি সে।
মাটি অবশ্য না চাওয়ার ভান করত;
ভাবত-- আমি কেন যাব এত কষ্টে হাওয়া সাঁতরে?
তাই মেঘ নিজেই আসছিল একদিন বৃষ্টি হয়ে।
হঠাৎ কেমন বদলে গেল সব---
কোথা হতে এক অরুণালোক তাকে ছিনিয়ে নিল!
সে বৃষ্টি আজ আর নেই,
যে মুসলধারে নতুন করে এ মাঠে ফিরবেই!
ভালো থেকো, ও হে কবি,
পারলে ভূলে যেও সেই বৃষ্টি ।
এসোনা এ নদীর পাড়ে,
আমি হারিয়ে গেছি ভাটার সাগরে !“
তারপর জীবনাগ্নে দগ্ধ কাব্য
পরে রইল ধূসর প্রান্তরে!
এখনো সে কবিতা লেখে
তীব্র আবেগ বুকে লয়ে সে উদাসী এক বাউলে।