মহিষাসুর সংবাদ
(স্বর্গ আজ কোথাও রয়েছে কিনা বলা মুশকিল, তবে নরকের দেখা মিলছে সর্বত্র। মর্ত্যের মানুষ এমনিতেই হতভম্ব, লুণ্ঠিত আর হাহাকার গৃহে গৃহে। এহেন অবস্থায় হঠাৎ মহিষাসুরের আবির্ভাব মর্ত্যে।)
মহিষাসুর - শুনে শুনে কর্ণ খসে যাওয়ার উপক্রম হয় সেই এক রটনা যে, আমি নাকি পাষণ্ড, তবে এরা কারা ?
আমরা তো কবে থেকেই রয়েছি সেই পুরাণ কিংবা রামায়ণ হতে, আমার গোত্রীয় রাক্ষসকুল, দৈত্য- দানো সবার কাজ হয়েছে সারা।
শুনতে পেয়ে নিচে থাকা এক স্বনামধন্য নেতা- ওরে তোরা আবার কি বলছিস?
উপরে থেকে নিজের দাম বাড়াচ্ছিস;
আমার ঘাড় ডিঙিয়ে হপ্তা নিবি,
এক গুঁতোতে সব পাল্টি খাবি।
মহিষাসুর- বলে কি, ওরে মূর্খ, আমায় চিনিস না,
তোরই তো পূর্বপুরুষ, আমার নাম জানিস না।
ওই নেতা- নিজের বাপের নামই মনে রাখি না,
তুই কোন হরিদাস পাল, তোর ধার ধারি না।
মহিষাসুর- তুই নিজেও গণ্ডমূর্খ, মুখের ভাষা তেমনই কদর্য
তোর বিনাশ অবশ্যম্ভাবী, চেয়ে দেখ, দেবতাকে ডাকছে ওই যে আর্য।
ওই নেতা- ও ব্যাটা, আবার কিসের আর্য, ও আমার কেনা
পয়সা দিয়ে পেট ভরাই, ও আসলে আমারই সেনা।
মহিষাসুর - দেবতাপুরী কি নিদ্রামগ্ন ?, কেউ কি দেয় না তাদের অর্ঘ ?
থামিয়ে দিয়ে ওই নেতা- চুপ, মেরে মুখ করব ভোঁতা, ছোট করে দেব সাইজ, আনছি খড়গ।
মহিষাসুর- দেখবি পাপিষ্ঠ, তোর আমি কি করি দশা ?
ফট করে নেতা গুলি চালিয়ে দিল, মহিষাসুর শূন্যে মিলিয়ে গেল আর দৈববাণীর মতো গম্ভীর মেঘনাদ শোনা গেল-
নইকো আমি কোন দেবতা, নইকো আমি কোন প্রথিতযশা ;
তোর তুলনায় আমিও অনেক ভালো ,
তুইতো কাদামাখা সরোবরের চাইতেও কালো ;
তোর সাথে থাকলে সাধুভাষা ঘুচবে আমার,
তার থেকে যাই দেবতাদের নাড়া দিই এবার;
দশভূজা মা না আসুক, মর্ত্যের মা কয়েক কোটি,
তাদের হাতেই বধ হবে তোর, তোর গড়া সাধের প্রাসাদ একদিন নেবে মাটি।
সাল - ১৪২৮, দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে রচিত।