হীরক রাজা যদি থাকত এখন
(কিংবদন্তী সত্যজিৎ রায় -এর অমর সৃষ্টি 'হীরক রাজার দেশে' -র প্রতি এক চিলতে শ্রদ্ধার্ঘ্য )
(প্রেক্ষাপট : করোনা কাল এবং হীরক রাজার বোধোদয় হয়েছে। এমতাবস্থায় সভা বসল একদিন।)
হীরক রাজার বসলো সভা
চুনি পান্নায় বাড়ালো শোভা।
হীরক রাজা : সংবাদ কিছু নতুন আনিছ
নাকি লকডাউনে মশা মারিছ।
বিদূষক : আজ্ঞে, রাজামশাই করোনা
বদলেছে সবার চিন্তাধারণা।
হীরক রাজা : চারিদিকে শুধু ত্রাহি ত্রাহি রব
শ্মশানের পারে বাড়িতেছে শব।
বিদূষক : মহারাজ, এবার প্রজারা রাজি না
পারবে না দিতে বলেছে খাজনা।
হীরক রাজা : ভেবো না আর মোরে পাষণ্ড
বিদূষক : বলেন কি ?, তাহলে প্রজারা পাবে না দণ্ড।
হীরক রাজা : ওহে অর্থমন্ত্রী, এবার খোল কোষাগার
প্রজাদের দেবো আমি আমার অর্থসম্ভার।
অর্থমন্ত্রী : সবাই বলো হীরক রাজার জয়।
জ্যোতিষী : একি ভালো হল মহারাজ, এত অর্থক্ষয়।
হীরক রাজা : এইশুনেই যদি তুমি ভীত হও
সারাবছরের খাজনা মাফ তাও তবে সও।
বিদূষক : যদি আমাদের বেতন কাটেন তাতে
রাজি আছি আমি, বল মন্ত্রী - জ্যোতিষী - তোমরাও পিছু নেই এতে।
অর্থমন্ত্রী : নিরুপায় আর কি বলার আছে, বল তোমরা কি বলছ বাকীসবে ?
জ্যোতিষী : মহারাজ যদি রাজি আছেন, তবে দেরী করা কাম্য কি হবে ?
বিদূষক : শুভ কাজে বিলম্ব করা বুদ্ধিমানের উচিৎ কি ?
আমাদের দেখে দেশটার বিবেক যদি নড়ে, তাতে ক্ষতি কি ?
হীরক রাজা : আজ তবে শপথ নিই
নিজেদেরকে আমরা বদলাবই।
শিক্ষক : হীরক - এর রাজা যদি বদলাতে পারে
দেশ করোনাকেও হারাতে পারে
সবেমিলে একসাথে রাজা- প্রজা
দূরত্ব বজায় রেখে চললেই মজা
বিদ্যাবুদ্ধি হোক সকলের এটাই চেয়েছি সারাজীবন
রাজার জয় হোক এই জয়ধ্বনিতেই আজ হোক মহামিলন।
হীরক রাজা : বাঃ, শিক্ষক বলেছ তুমি বেশ
এবার তবে মোদের লড়াই হোক শেষ
শিক্ষাদীক্ষা হোক সবার
নতুনভাবে বাঁচবো এবার।
আবার হীরক রাজা : বলো সবাই ঠিক তো।
সমস্বরে সকলে মিলে : ঠিক ঠিক ঠিক।
......................
সর্বশেষে আমার তরফ থেকে দু-পংতি :
তুচ্ছ এই ভেটটুকু মোর করিলাম অর্পণ
হীরক রাজার দেশের প্রতি রইলাম আমি ঋণী আজীবন।
মে, ২০২০।