একগুচ্ছ কবিতা-২০২১
সুধীর দাস
জোসনায় ভরে গেছে মাটির পৃথিবী
সুধীর দাস
জোছনায় ভরে গেছে মাটির পৃথিবী
আকাশের বুক তাই এলেমেলো কাঁদে
বেদনার শরবনে ভালোবাসা বাঁধে
সবকিছু শেষ করে দিয়েছি কি নিবি?
এই প্রাণ এই দেহ নিঃশেষ করেছি
তোর রাঙা পায়ে সব করেছি অর্পণ
কিছু নেই বাকি আর সব সমর্পণ
যাযাবর প্রাণ টুকু না প্রেমে মরেছি।
এরপরও যদি চাও দিতে পারি প্রাণ
তারপর ছায়াপথে দিব আমি পারি
তুই শুধু সুখে থাক সবকিছু কাড়ি
জোছনা তারার সাথে গাইব যে গান।
আকাশের তারা হয়ে জ্বলজ্বলে জ্বলে
নিশিদিন সারারাত যাবো কথা বলে।
25,01,21
আমার নাম বলবে তুমি
সুধীর দাস
আমার নাম বলবে তুমি
সেটা শোনার জন্য
আমি অনন্তকাল অপেক্ষায় থাকবো
আকাশের চাঁদের মত
নক্ষত্র ফুল হয়ে
সত্যি কি তুমি আমার নাম ধরে ডাকবে?
হে আকাশ হে নক্ষত্র
আমি তোমার প্রিয়তম হবো
যুগ যুগ ধরে অনন্তকাল।
দুই হাত তাই বাড়িয়ে আছি
জোছনা ফুলের কাছে।
26,01,21
কবিতার প্রেমে
সুধীর দাস
কবিতা পালিয়ে যায় কবি কাঁদে দুখে
জানেনা কবিতা কি যে কষ্ট তার বুকে
কবিতার প্রাণ জুড়ে কবি ফোটে ফুল
কবিতাকে ভালোবাসা কবির কি ভুল?
অনন্ত আকাশ মাঝে কবিতার ভেলা
কবিকে নিয়ে কবিতা করে অবহেলা
কবিতা ছাড়া কবি যে চির সর্বহারা
কবিতা বোঝেনা তাহা কবি যায় মারা।
কবিতা ছাড়া কবির বাঁচে না যে প্রাণ
কবিতার ছলনায় মৃত্যুময় ঘ্রাণ
কবিতার পায় যদি এতোটুকু সাড়া
কবির রুক্ষতা বুকে বয় জল ধারা।
নক্ষত্রের ফুল ফোটে কবিতার প্রেমে
কবি প্রাণ গায় গান স্বর্গ আসে নেমে।
কোলকাতা
২৭.০১.২২
নিষ্ঠুর কবিতা তুমি
সুধীর দাস
নিষ্ঠুর কবিতা তুমি কবিকে বোঝনা
সারারাত অপেক্ষায় শুধু জেগে থাকি
নাম ধরে ভালোবেসে কত নামে ডাকি
অহংকারী অভিমানী প্রেম তো খোঁজ না!
কবিতা সুন্দরী তুমি দেখা তো দাওনা
আকাশের তারা তুমি রূপ ঝলমল
চোখে শুধু বৃষ্টি দাও ছলে ছলছল
দিয়েছি সব উজারী বুকেতে নাওনা।
কেমনে বোঝাই বলো প্রেয়সি অস্পরী
তোমার চরণ ছুঁয়ে করি আরাধনা
তুমি তবু চিরদিন থাকো আনমনা
জীবন করেছি দান চোখে জল ঝরি।
নিথর নিস্তব্ধ তুমি করো অবহেলা
তবুও তোমার তরে ভাসিয়েছি ভেলা।
25,01,21
রাত-4.25
কংক্রিটের শহর বুক পাথর সময়
সূধীর দাস
কংক্রিটের শহর বুক পাথর সময়
রক্তাক্ত পাঁজর ধ্বস আসন্ন প্রলয়
ভাগাড়ে খাদ্যের ঝুলি কুকুর বড়াই
কাকের মিছিল নামে বাঁচার লড়াই।
মৃত্যুময় ধ্বংসস্তূপ স্যাতসেতে শব
সূর্যোদয় ভোর ম্লান ভগ্ন কলরব
অন্ধকার স্তব্ধ শর অস্ফুট বিবেক
বিধ্বস্ত পূর্ণিমা ক্ষয় জটায়ুর ভেগ।
উর্বশী চঞ্চল তবু মৃত পদচিহ্ন
উর্বর উচ্ছল স্নিগ্ধ নয় ছিন্নভিন্ন
যন্ত্রণার কারাগারে বাঙময় সূর্য
পদাঘাতে পদধ্বনি বাজে রণতূর্য।
দুর্বিনীত দেবো শিশু অগ্নিময় গর্ভ
ওদত্ত্বের দ্যুতিময়ে বাগ্মিতায় গর্ব।
27,01,21
সারাবেলা মনে খেলা
সুধীর দাস
সারাবেলা মনে খেলা তোমার ছবি ভাসে
এক পলকে যায় হারিয়ে আবার ছুটে আসে
বুকের ভেতর পদ্ম ফোটে খলখলিয়ে হাসে
তবু যেন প্রাণটা আমার কাঁদে মরা লাশে।
ভালোবাসি ভালোবাসি বুকের ভেতর ঢেউ
ঢেউ ভাসিয়ে মনের কোনে আসো নাতো কেউ
শূন্য বুকে আঁধার ঘরে জ্বালায় না কেউ দীপ
ভাঙ্গা কপাল দেয়না জুড়ে কেউ পারায়না টিপ।
টাপুর টুপুর বুকের ভেতর ছলাক ছলাক নদী
আমার ভুবন আলো হবে ভালোবাসো যদি
দিলাম তোমায় সাগর নদী বন পাহাড়ি ফুল
ভালো যদি বেসেই ফেলি বুঝ নাকো ভুল।
ভুল মানে ভুলো মনে চোখের ভরা জল
ব্যর্থ ভরা বুকের কাছে ব্যাথার ছলাৎ ছল
হৃদয়খানি শূন্য আছে আসতে তুমি পারো
ভালোবাসা শূন্য হলে বাসতে পারো আরো।
যাচাই করে নিতে পারো আসল নকল কিনা
আমার বুকে তোমার হৃদয় বাজিয়ে প্রেমের বীণা
দেখতে পারো তোমার বুকে মিলে আমার বুক
তোমার আমার মিলন হলে কেমন হবে সুখ।
27,01,21