চিঠি
সুধীর দাস
কবিতা,
চাঁদের বসতি ভেঙ্গে গেছে।আকাশের বুকে যত টুকু মেঘে ঢাকা ছিল তাও আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে মনে হয়। নক্ষত্রের যে তারাগুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলতো তাও মিলিয়ে গেছে ছায়াপথের কোল ঘেষে আস্তে আস্তে।
আঁধারে ঢেকে আছে আজ আকাশের মিনার। শোকের সায়ান্য তিথি বুকের ফুসফুস খুড়ে খুড়ে খুবলে খুবলে পাঁজর থেকে রক্ত উগরে নিচ্ছে নৈঃশব্দের আড়ালে। হয়তো কিছুদিন পর রক্ত বমি হবে, জীবনের বাতায়ন-পাশে দুর্গন্ধময় যন্ত্রণার শব তৈরি হবে।
বেঁচে থাকার নিভু নিভু প্রদীপ হয়তো একদিন মিলিয়ে যাবে আকাশের নীল যমুনায় নীল নীল ধোঁয়া হয়ে। জীবনবোধের সৌন্দর্য নান্দনিকতা সব হারিয়ে যাবে কালের গহ্বরে।
পরিত্যক্ত ধ্বংসের নগরী পরে রইবে নিঃসঙ্গ একা।
কবিতা,
তিল তিল করে বুকের ভেতর যে গ্রথিত স্বপ্নগুলো মহীরুহ ধারণ করেছিল তা ভেঙে গেছে এক আচমকা ঝরে। কোনোদিন সেই গাছের ফুল ফুটবে না বাতাসে তার ভোরের আলো বইবে না। আসবে না কোন পরিযায়ী পাখি ভালোবাসার অভিবাদন জানাতে।
কত যুগ কত সাধনা কত অভিযান তারপর মানুষ একদিন ভালোবাসা খুঁজে পায়। সেই সব ভালোবাসা দিনগুলো আজ বড় অতীত। জীবন যুদ্ধে পরাজয় মেনে নিতে নিতে আজ শুধু বেঁচে থাকাটাই দায়।
কত বসন্ত কত ফুল কত নগর-মহানগর কত ফুল কত পাখি জীবন থেকে মানুষের হারিয়ে যায় তবুও তারা বেঁচে থাকে আমার স্বপ্ন বাঁধে আবার জীবনের গান গায়। আমার মত অবাঞ্চিত মানুষের অপাংক্তেয় আত্মার জীবনে আর কোনদিন হয়তো স্বপ্ন বাঁধবেনা।
পাথরেও একদিন ফুল ফোটে। শুকনো নদী আবার একদিন স্রোত ফিরে পায়। মরা বাগানে হয়তো আবার ফুল ফুটে।যে পাখির ডানা ভেঙ্গে যায় সে আবার ঘুরে দাঁড়ায় আবার উড়ে বেড়ায় আর খায়-দায় ফুর্তি করে। কিন্তু আমার মত ডানা ভাঙ্গা পাখির সেই সব স্বপ্ন আর কোনদিন ফিরে আসবেনা।
জীবন থেকে সব হারিয়ে গেছে। সুখস্বপ্ন ঐতিহ্য ধৈর্য সব কিছু আজ বিলীন মলিন। জীবনের ধূসর পান্ডুলিপি। আকাশে আত্মার বুদবুদে তারা খসা স্বপ্নগুলো চাঁদের জোছনার আলো কালো আঁধারে ঢাকা।
কবিতা,
জীবনের স্বপ্নগুলো হারিয়ে গেছে। জানি আর কোনদিন ফিরে পাব না। তুমি নক্ষত্র হয়ে আকাশে জ্বলজ্বল করো চিরদিনই,আমি তোমার' উল্টা পিঠে থাকবো।
তোমার
কবি
১৮,০১,২১