জগৎ খানি বড় বৈচিত্র ময়
কে কার খবর রাখে,সবায় সবার ব্যস্ততা নিয়ে ব্যস্ত।
উড়ো ধুলা-বালির পথ ধরে হাঁটছিলাম রাস্তার গায়ে
বেশ অস্বস্তি লাগছিলো,অস্বাভাবিক গাড়ির বিকট শব্দ
তবু ও হাঁটছি,নজরে পড়লো একটা ছেলে বয়স পাঁচ
কিংবা ছয় হবে,আমার পিছু পিছু দৌঁড়ে আসছে দ্রুত
হাতে একটা থালা নিয়ে,তার মনে কোন ভয় দেখতে
পেলাম না চারিদিকে কত গাড়ি ছুটাছুটি করছে ,
সেদিকে তার বিন্দু মাত্র খেয়াল নেই। আমি থমকে
দাঁড়ালাম,ততোক্ষণে ছেলে টি আমার কাছে এসে
কাঁদোয়া স্বরে বিলাপ করে বলতে শুরু করলো ,
"দিদি আমায় ক'টা টাকা দাও না গো ঘরে অসুস্থ মা
না খেয়ে আছেন,আমি ও কিছু খাই নি এই দ্যাখো
পেট টা কেমন ছোট হয়ে আছে,ক্ষুধার জ্বালায় অস্থির"।
আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না তাকে নিয়ে
হাঁটলাম ,একটা রেস্টটুরেন্টে নিয়ে গিয়ে অনেক করে
খাওয়ালাম। তার বাবার কথা জিজ্ঞেস করতে সে তার
বাবা কে খুব করে গালি দিয়ে বললো দিদি ঐ লোক
কে নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করো না,মা বলেছেন সেই
লোক টা না কি আমার মায়ের সাথে বহুত ফ্রড করেছে।
আমি চমকে উঠলাম,"আরে তুমি তো দেখছি ইংরেজি
ও জানো"!!ছেলেটি তার ঠোঁটের আড়ালে ফুর্তি লুকিয়ে
বললো "দিদি আমি প্রতিদিন ইসকুলে যাই,বিকেল হলে
পেটের দায়ে এখানে আসি,সবার অবহেলা আর উপেক্ষা
মিলিয়ে কোন রকম মা,বেটার পেট চলে'। আমি বিস্মিত
হলাম,ছেলে টি এতো অল্প তে এতো কিছু জানে !!
সে দায়িত্ব নিতে শিখেছে।দেখলাম সে প্রচন্ড শীতে কাঁপছে
গায়ের জামা টি ও শত তালিতে বুনা ।কেমন যেন মায়া
জন্মে গেলো।ভালো থেকে একটা শীতের জ্যাকেট এবং
একটা জামা কিনে দিলাম।এবং শ'পাঁচেক টাকা ও দিলাম
তার হাতে।এই অল্প কিছুতেই ছেলেটির মুখের দিকে
তাকাতেই দেখলাম তার,মুখে ধরণীর সব সুখের উল্লাস
খেলা করছে।এত অল্প তেই সে এতো খুশি!!বিদায় নিয়ে
ছেলে টি চলে যাচ্ছিলো,আপন পথে,হঠাৎ মনে পড়লো
আরে ছেলেটির নাম টা তো জিজ্ঞেস করা হলো না !!!
ততোক্ষণে ছেলেটি অনেক দূরে চলে গেছে ।হাত ঘড়ি
টির পানে তাকাতেই আৎকে উঠলাম!! এই রে!! সে
বুঝি অপেক্ষা করে করে চলেই গেলো ..................।।
রচনা
৩১।০১।২০১৪