সময়ের তালে তালে এখন কবি হওয়া অত্যন্ত সহজ ব্যপার, গোটা কয়েক কবিতার আত্নপ্রকাশ আর এক বা একাধিক মলিন প্রচ্ছদ, এই সম্বল থাকলেই আজকাল কিছু না হোক বাঙালি কবির তকমা পাওয়া যায় ।
একবার কবি হতে পাড়লে আর কে পায় । এই যে আমি কবিতা লিখি তার মানে কি আমি কবি ? আমার তো মনে হয় যে আমি এখনও পর্যন্ত একটিও কবিতা লিখতে পরেছি কিনা তা গোনে দেখতে হবে । খাতায় এলোমেলো
দুচারটে শব্দ সাজিয়ে ফেলা মানে কবিতা নয়। কবিতার জন্ম হয় হৃদয়ের অতল গভীর থেকে, যেখানে কল্পনা , বাস্তব আর বর্ণনা মিলে তৈরী হয় কবিতার সার-বত্তা । বিখ্যাত সাহিত্যিক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মতে কবি হবেন তিনি
যার মধ্যে দর্শন এবং বর্ণনা আছে । আপনার দর্শন আছে কিন্তু বর্ণনা নেই, তাহলে কিন্তু আপনি কবি হতে পারেন না । কবি হবেন তিনি যার মধ্যে এই দুটোই আছে ।
যখন যে বা যারা কবিতা লেখেন প্রত্যেকেই নিজের সবটুকু ঢেলে দিতে চান সেই কবিতার জন্য । কিন্ত যখন সেই কবিতায় ভাবের ঘরে চুরি হয় তখন সেটা আর কবিতা থাকে না । আমি কবিতা লিখতে বসে যখন যখন ভাবের ঘরে চুরি করেছি তখনই সেই কবিতাও আমায় ফাঁকি দিয়েছে । তাই নিজেকে ফাঁকি দেওয়া মানে কবিতার সাথে নিজের দূরত্ব তৈরী করা । একজন কবির কাজ হলো সমাজের অন্ধকার কোনগুলিকে সেই কবিতার মাধ্যমে আলোকিত করে সকলের সামনে তুলে ধরা । সমাজের প্রতি কবির প্রকৃত দায়ব্ধতা কবি কিছুতেই এড়াতে
পারেন না । যে কবির কবিতার মধ্যে ভাবনারা স্বাধীন থাকবে সে কবিতা আপামোর পাঠকের দৃষ্টি লাভ করবেই । অথএব , প্রত্যেক কবিকে আগে কল্পনার দিক দিয়ে স্বতন্ত্র হতে হবে । তার পর না হয় কবিতা লেখার কথা ভাবা যেতে পারে ।