ফিরে এসেছে লোকটা
আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে যুদ্ধে যে গেছিল হারিয়ে।
সরকার যার মৃতদেহ করেছে সৎকার,
সন্মান জানিয়েছে মরনোত্তর পুরস্কারে।
সে এসেছে ফিরে –
দ্বারে আজ জনসমাগম –
মানণীয় অতিথীদের গাড়ীর মেলা,
উচ্চস্বরে বেজে চলেছে বিদেশী সঙ্গীতের সুর।
বিলেত ফেরৎ অফিসারের আজ বিয়ে।
যে সে মেয়ে নয়- বিলেতের ইংরাজী জানা বিদেশিণী মেয়ে।
বাড়ীতে তাই বিবাহ অনুষ্ঠান নয় – পার্টি।
হাতে হাতে ঘুরছে লাল তরলের গ্লাশ,
বাজনার তালে পর-পুরুষের কণ্ঠলগ্না স্বল্পবাস পরিহীতা নারী।
এরা সম্ভ্রান্ত – সমাজে মানণীয় – এটাই পার্টি।
সাধারনের নেই প্রবেশের অধিকার।
দূর থেকে দেখে – বিধবার বেশে ঘরে বন্দিণী তার স্ত্রী।
পীপাসু দুটী চোখ খুঁজে বেড়ায় তার আদরের ছেলেকে।
পাঁচ বছরের ছোট্ট খোকন আজ ‘মিষ্টার কন্’।
মদ্যপ ছেলে মাটিতে থাকে লুটিয়ে-
স্বল্প বস্ত্রে স্ত্রী তার অন্যের শয্যায়।
প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘরে ঢুকে চুরি করে সে,
নিয়ে আসে ছোট্ট খোকনের নির্মল ফটো,
ছিনিয়ে আনে বন্দিণী স্ত্রীকে।
শুরু হয়েছে লড়াই- বেজে উঠেছে দামামা।
এ লড়াই বিদেশী শ্ত্রুর সাথে নয়-
এ লড়াই সভ্যতার বিকৃত রূপের বিরুদ্ধে –
এ লড়াই নিজের অস্তিত্য বাঁচানোর।
ফিরে এসেছে সে তাই – সে যে সৈনিক।।