কবিতা
আমি আর আমার কবিতা,
কৈশোর থেকে যৌবন হয়ে বার্ধক্যের সাথী।
কাটিয়েছি কত সময় সঙ্গোপনে।
বসেছি নদীর ধারে, রেখেছি হাত হাতের উপড়ে।
দেখেছি কতই স্বপ্ন, সৃষ্টি করেছি নতুন পৃথিবীর।
সেদিন চা খেতে গিয়ে ছলকে গেল পরে কাপড়ে।
রে রে করে উঠলে সকলে, লজ্জায় চলে এলাম ঘরে।
পাশে এসে বসলে আমার কবিতা।
আমার কাঁপতে থাকা হাত
শীর্ণ হাতে তুলে নিলে নিজের কোলে।
বললে, তুমি বুড়ো হয়ে গেছো,
তোমার সেই সিংহের গর্জন এখন আর নেই।
প্রতিবাদের ভাষা তোমার গেছে হারিয়ে।
চলাতে নেই সেই হরিণের দ্রুততা।
বাক্সে ভরা তোমার নানান ওষুধ,
ঘুম গিয়েছে কমে, খাওয়াতেও অনেক বাধা।
মাথায় নেই সেই ঘন কালো একরাশ চুল,
সেখানে আগমন হয়েছে অল্পকিছু সাদা চুলের।
চামড়ায় নেই সেই উজ্জ্বলতা,
হারিয়েছে শরীরের পেশীর ভাঁজ।
তুমি সত্যিই বুড়ো হয়ে গেছো।
মুচকি হেঁসে লোলচর্ম মুখের দিকে চেয়ে বললেম,
তুমিও তো বুড়ি হয়ে গেলে,
কোথায় তোমার সেই কথার ঝাঁঝ।
হাঁটু কোমরে তোমাকেও তো করেছে কাবু।
একরাশ ঘন কালো মেঘের দল আজ শনের ঝুরি।
তোমার সেই পেলব সুগন্ধি শরীর আজ লোলচর্ম।
চোখে তোমার উঠেছে পুরু কাঁচের চশমা।
সাজানো তোমার দাঁতের পাটিতে আজ আছে কয়েকটি।
আজও কিন্তু তুমি ভুলে যাও অনেক কিছু সেই আগের মতই।
ফোকলা দাঁতের হাসি হেঁসে জোড়ে চেপে ধরে আমার হাত।
বলে তবু তুমি আছো বলে আমায় নিতে হয়না লাঠি।
আজও তুমি মনে করিয়ে দাও আমায় ওষুধের কথা।
আজো রাত জাগো তুমি বুড়ির মাথার কাছে বসে।
আমরা আজ প্রাচীন, আমাদের ভালোবাসা আজও নবীন।
আমার বুড়ো আছে বলেই আজও আছে তার কবিতা।

                                                     শঙ্কর রুদ্র
                                                     ১৯-০৪-২০২৪
                                                     নয়ডা