ভাগীরথীর পূর্ব তীরে
ছোট্ট একটি গ্রাম,
ফলে ফুলে শস্যশ্যামল
শেতলা তার নাম।
পাকা ধানের জমি সেথায়
সোনালী রঙ ধরে,
সোনার ফসল কাটবে চাষা
রাখবে গোলা ভরে।
বসির চাঁচা লাঙল নিয়ে
চলে আপন কাজে,
বলদ গলায় ঘন্টাখানি
ঠন্ ঠনা ঠন্ বাজে।
আলের পথে পাঠশালাতে
যাচ্ছে ছেলের দল,
রাখার ছেলে চলল মাঠে
সঙ্গে গরুর পাল।
বধূরা সব কলসি কাঁখে
জল আনিতে যায়,
আঁকাবাঁকা মেঠো পথটি
চলে সর্পের ন্যায়।
জেলে চলে মাছ ধরতে
কাঁধে নিয়ে জাল,
কামার ভায়ার নিপুনতায়
তৈরি কত হাল।
কানু ধোপা কাপড় নিয়ে
নদীর পানে ধায়,
বেনু মাঝি গান ধরে ঐ
নায়েতে দার বায়।
সন্ধ্যাবেলায় তুলসীতলায়
প্রদীপ জ্বালায় সবে,
চারিদিক হয় মুখরিত
ঝিল্লির কলরবে।
প্রভাত জাগে পাখির ডাকে
সন্ধ্যা নামে শাঁখে,
রাত্রিকালের মায়াজালে
হুতোম পেঁচায় ডাকে।
বৃষ্টি শেষে মাটির ঘ্রাণে
মাতাল করে হিয়া,
শীতল বায়ুর অনুভূতি
জ্বালায় সুখের দিয়া।
মিলেমিশেই রয় গো ওরা
গ্রামনিবাসী সবে,
গ্রামটি ওদের মাতৃসম
বলে সগৌরবে।
*********
১৯/০৮/২০১৬
কল্যাণী, নদীয়া