ঠিকনা আমার জানিতে বন্ধু চেয়েছ যে সত্তর
কোথায় আমি বসত করি কোথায় আমার ঘর।
আমার ঠিকানা কেন হে বন্ধু আমাকে শুধাও হায়—
ঠিকানা আমার রয়েছে লিখা আমারি কবিতায়।
মিছে কেন বন্ধু ঠিকানা আমার খুঁজিয়া বেড়াও তুমি
যদিও জানো ঠিকানা আমার বাংলার আকাশ-ভূমি।
বাংলার বুকে হাসি গাই আমি বাংলাতে মোর খেলা
এসব জেনেও কেন কর তবু ঠিকানার ঝামেলা।
ঠিকানা আমার শোষিতের তরে, ঠিকানা প্রতিবাদ মুঠো
ঠিকানা আমার হা-ভাতের ঘরে যেথা ভাত মিলে না দুটো।
আমার ঠিকানা দুখের দুয়ারে সুখ যেথা গেছে ছাড়ি
এমন ঠিকানা চেয়ো না বন্ধু দুখ যে সেথায় ভারি।
আসিবে বন্ধু আমার ঠিকানায়? লিখিবে আমায় চিঠি?
ঠিকানা আমার বন্ধুর পথ, তবু আসিতে হইবে হাঁটি।
চিঠি লিখবে সে আশও মিছে ডাকেতে জুয়াচুরি,
মিল যে কেমনে হইবে মোদের তাই ভাবিয়া মরি।
ঠিকানা না হয় না নিলে বন্ধু এ ঠিকানা যে দুর্গম
এ ঠিকানার পথে চলিতে গেলে হতে হবে নির্মম।
পারিবে বন্ধু চলিতে সদায় আমার ঠিকানা পথে?
বলিব তবে ঠিকানা আমার চলিতে আমার সাথে।
ঠিকানা আমার জানিতে চাহ, জানিও না হয় পরে
ঠিকানা আমার দিয়েছি রেখে বাংলার ঘরে ঘরে।
ঠিক আছে বন্ধু বলিব তোমায়, ঠিকানা লহ লিখি
দেখিবে যেথায় হাহাকার সদা সেথায় আমি থাকি।
অন্যায়ের বাঁধ যেখানে প্রবল সেথায় নিবাস গড়ি,
যেথায় মানুষ হতেছে দগ্ধ সেথায় আমিও মরি।
মানুষের যেথা সহানুভূতি আর মরে গেছে অনুরাগ
সহানুভূতির শিকড় গাঁড়িতে সেখানে বসাই ভাগ।
মানুষেরে ভালবাসিয়া আমি মানুষের তরে ছুটি,
মানুষ ধর্ম ঠিকানা আমার মানুষেতে তাই লুটি।
হয়তো বন্ধু বলিবে হেসে, ঠিকানা তোমার নাই
তবু চির ঠিকানা জানিয়ো আমার সোনার বাংলায়।