উদিছে সূর্য পূর্ব দিগন্তে
আলোয় ভরিয়ে ধরনীর কোল,
উঠিছে হাসিয়া ফুল-পারিজাত
নিশিঘোর শেষে পেয়ে রাঙাপ্রাত
ছিঁড়িয়া নিশির গর্ভের মূল।
জাগিছে পুলক থরে-বিথরে
হাসিছে তপন গগন মাতি,
পিক-পাকিয়া শুধু ডেকে যায়
পত্র-পল্লব চোখ মেলে চায়,
কাটিছে যখন বিষাদ রাতি।
নাই কোথা কোন দুখ-কালিমা
উল্লাস শুধু গড়িয়ে পড়ে,
বাজিয়ে ডঙ্কা প্রভাত শুরুতে
চির-ভাস্বর হর্ষ কুড়োতে,
উল্লসিত এই মনের ঘরে।
তেজিল রবি আসিল দুপুর
প্রাণ পেল নব-চেতনার কূল,
মধ্য রবির প্রখর হাসি
আঁধার ঘুঁচিয়ে রাশি রাশি,
তুলিল ফুটিয়ে প্রেরণার ফুল।
কিবা হাহাকার উঠিল আবার
ত্রাসেকাঁপে দেহ-ধরনীর বুক,
হায় কি বেদনা উঠিল বায়ে
চলিল রবি তেজ গুটায়ে,
ফুল-বীথি সব হল অধোমুখ।
রক্তরবি শিথিল হলে পরে
নামিল এসে সন্ধ্যা লগন,
ফুল-পারিজাত লাগিল ঝরিতে
শুভ্র আকাশের হাসিটি হরিতে;
নিথর মেঘেতে ভরিল গগন।
অবশেষে এল নিঠুর বিদায়
সব ত্যাগিয়া সেঁজুতি ক্ষণে,
করিল যাত্রা পশ্চিমাচলে
কোন্ সে বিধির বিধান বলে,
ক্ষণস্মৃতি রেখে ভুবন কোণে।