পাথরে পূর্ণ হয়ে ওঠেছে বুকের ভিতরের পিত্তথলি
পাথরগুলো জড় পদার্থ নয়, সজীব-জ্যান্ত;
দিনে দিনে বেড়ে করে চলে বংশ বিস্তার।
পিত্তথলির ভিতর পূর্ণ রাজত্ব কায়েম করেছে পাথরগুলো
তাদের সেই রাম রাজত্বের জয়োল্লাস অহরহ
আমাকে ব্যথায় কাতর করে তোলে।
পাথর অপসারণের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুণছি আমি
হাসপাতালের বেডে। পাথরগুলোর বিজয়োল্লাস
দমনের জন্য ডাক্তার নিয়মিত ব্যথানাশক ওষুধ দিচ্ছেন
মাঝে মাঝেই জয়োল্লাসে মেতে থাকা পাথরগুলো
ব্যথানাশক ওষুধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে-
আমাকে ব্যথাকাতর করে কাঁদিয়ে চলে।
শরীরটা অস্ত্রোপচারের উপযোগী না হলে
পাথর অপসারণ সম্ভব নয়; চলে নানা পরীক্ষা।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমার অপেক্ষার প্রহর বাড়ে,
বেড়ে চলে যন্ত্রণা, যন্ত্রণাকাতরতার ছটফটানি।
সব পরীক্ষায় পাস করল শরীর,
আটকে ডায়াবেটিক পরীক্ষায় এসে,
রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রাটা তুলনায় বেশি।
আগে দরকার এর নিয়ন্ত্রণ, তারপর অপারেশন।
অপেক্ষার প্রহর বেদনার, তার উপর যদি থাকে
শারীরিক যন্ত্রণা, তবে তা নতুন মাত্রা পায়।
আমার অপেক্ষার প্রহর বৃদ্ধির সঙ্গে
পেয়িং বেডের মিটার বাড়ে, বাড়ে যন্ত্রণা, অধৈর্য।
এসব ডাক্তারের কারসাজি কিনা জানি না।
তবে বুঝি অনেক কিছুই, বলতে পারি না।
যার হাতে আমার জীবণ-মরণ, তার সাথে জোর গলায়
কথা বলা যায় না, তাকে চ্যালেঞ্জ করাও বোকামি।
বুদ্ধিমানের মতো তাই চুপ করে থাকি।
অনুগত হয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মানি।
পক্ষকাল অপেক্ষার পালা শেষে পাথর অপসারণ হলো,
ডাক্তার পেট চিরে বের করল বিশালাকার চারটি পাথর।
ততদিনে কাড়ি কাড়ি অর্থের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হয়ে গেছে,
তারা স্বর্গে গিয়ে স্থায়ী আসন পেতেছে হয়তো।
তারা বয়ে নিয়ে গেছে আমার বেদনা
রেখে গেছে মুক্তি।