দারিদ্র্য ব্রাহ্মণের ভূষণ,
কবির ভূষণ জীবনব্যাপী দুঃখ!
এই দুটি গুণ- না না গুণ নয়, দোষ;
এই দুটি দোষই আমার ঢের আছে,
সে বিবেচনায় আমি কবি এবং ব্রাহ্মণও।

অসীম দুঃখবোধ আজন্ম আমার হৃদয়ে,
সেই দুঃখপ্রসূত সকল ভাবনা- লেখনি হয়ে
রূপ নিচ্ছে কবিতায়, তাই তো আমি কবি।
দুঃখবোধের গভীর স্রোতধারা কবির বুকে
সদা প্রবাহমান, তাই দারিদ্র্যের সঙ্গে দুঃখও
আমার আরেকটা ভূষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে,
দুই ভূষণের ধ্বজাধারী আমি কবি ও ব্রাহ্মণ।

সব ব্রাহ্মণ যেমন পুরোহিত নয়- তেমনি
সব পুরোহিতও ব্রাহ্মণ হয়ে উঠতে পারে না;
অব্রাহ্মণ থেকেই এরা পুরোহিত্য করে বেড়ায়।
এটা কোনো অপরাধ নয়। শাস্ত্র কি বলছে?
“পুরোহিত্য করার জন্য ব্রাহ্মণ হওয়ার প্রয়োজন নেই
সকলের ক্ষেত্রেই নিজের পুজা নিজে করা উত্তম।”
হোক সে অব্রাহ্মণ, উঁচু-নিচু যে কোনো জাতের।
তবুও শাস্ত্রের এই সিদ্ধান্ত মানা মানুষের বড় অভাব।
অথচ শাস্ত্র মানা অসংখ্য মানুষ এখনো বহাল তবিয়তে;
তারা দুনিয়া থেকে পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়নি।
এরা লোকাচারের বিরুদ্ধে পা ফেলতে ভয় পায়,
তাই তো পুরোহিত নামধারীরা রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে।

ব্রাহ্মণ একটা জাতি, আর পুরোহিত্য হচ্ছে পেশা,
ব্রাহ্মণ তার নিজ ভূষণ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে
পুরোহিত্য করে বেড়ায়। কিন্তু আমি কবি ছন্নছাড়া,
আমি আজন্ম সঙ্গী দুঃখকে দূর করতে অক্ষম,
পুরোহিত্য করে দারিদ্র্য ঘুচাতেও আমি সাহসহারা,
বাস্তবেই জগতে আমি বড় অকাজে, বড়ই অথর্ব।