অনেকগুলো জ্যান্ত মানুষে উদরপূর্তি করে
ধেয়ে চলেছে একটা যন্ত্রদানব।
উদরস্থ মানুষগুলোকে নির্দিষ্ট ঠিকানায়
সময়ের সুবৃহৎ পাখা গুটিয়ে, নির্ঝঞ্ঝাট
উদর হতে উগড়ে দেবার দুরন্ত প্রত্যাশায়।
তার চাকাওয়ালা ত্রস্ত পায়ের ঘোর সংগ্রামে
পিচঢালা পথটি হয়-বেগে পিছনে দৌড়ুচ্ছে
সপাৎ সপাৎ শব্দে দু’পাশের গাছগুলোকে পিছনে ফেলে।
এই দুরন্ত ছুটে চলার এক আরামপ্রদ দুলুনি
উদরস্থ মানুষের চোখ নিংরিয়ে
নিয়ে এসেছে একটা তন্দ্রার আভা।
মাঝে হঠাৎ একটা অযাচিত অদ্ভূত ঝাঁকুনি!
তারপরই দানবটি ট্রাফিক শিকারীর বাঁশি উপেক্ষা করে
কখনো সিগন্যাল পোস্টের লালবাতি অগ্রাহ্য করে
আত্মরক্ষার জন্য লাফিয়ে, গতিরোধক ডিঙিয়ে;
আরও দ্বিগুণ বেগে ছুটে চলল দানবটি।
উদরস্থ মানুষের সহসা ঘুমভাঙা আতঙ্কিত দৃষ্টি;
উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে পরম কৌতূহল ভরে।
তাদের কেউবা প্রত্যক্ষ করল,
যারা পারল না তারা শুনল
মাতাল দানবটির ঘটানো এক হত্যাকান্ডের কথা।
হত্যাকান্ড!
নরহত্যা?
কি অপরাধ করেছিল সেই কিশোর ছেলেটি?
করেছিল বৈকি!
পথ পাড়ি দিতে গিয়ে সে বেপরোয়া দানবিটর
গন্তব্যপথের মধ্যে এসে পড়েছিল।
কিশোরটির এই দুঃসাহসের বাঁধ ভাঙতেই—
কালো পিচ রাঙা করে চলল দানবটি।
চলছে সে,
গতি তার দুর্দম!
সহসা ভাঙতে হবে দূরত্ব শৃঙ্খল,
এড়াতে হবে সম্ভাব্য বিপদের অপ্রতিরোধ্য ছোবল।
কিন্তু তার আগেই হঠাৎ ‘ঝপাস’।
একটা অদ্ভূত পিলে চমকানো শব্দ!
হুড়মুড় করে ছুটে এসে জড়ো হল অনেকগুলো মানুষ;
বিস্তৃত ময়দানে শশব্যস্ত ত্রাণ মুখরতার কলম্বন।
চুপসেপড়া দানবের পেট থেকে
টেনে-হিঁচড়ে বের করা বিক্ষত মানুষগুলোতে—
গড়ে উঠল একটা চোখ ঝলসানো ব্যতিক্রমী স্তূপ!
এই মানুষগুলোকে টেনে বের করার পূর্বেই
দানবের পেটে পরিপাক হয়ে গিয়েছিল মানুষগুলো।