রাঘবপুরের মোড়ে একখান ছোট্ট দোকান চায়ের,
কম রোজগারে ওয়াল-পেপারে নামটি লক্ষ্মী মায়ের।
তার নীচেতেই লিখেছে সে 'দত্ত ভাইয়ের চা'।
জীবন তোদের হবে ধন্য একটু খেয়ে যা।
দোকান চালাই বীরেন দত্ত, বয়স পঁচিশ হবে---
সংসারের হাল ধরেছে তখন, বাপ মরেছে যবে।
প্রতিদিনই এক বি.এড. ছাত্র, চা খেতে যে আসে
পড়ার হিসাব বলে চলে যায়, বীরেন দত্ত হাসে।
এটা যে তার ফার্স্ট সেমিস্টার, প্র্যাক্টিকামের চাপ---
এসাইনমেন্টে মাথা ধরেছে, দাও তো এক কাপ।
কেটলি থেকে চা-টি ঢেলে বীরেন দত্ত বলে---
আচ্ছা দাদা কোর্স ফিজটা ঠিক কতোটা নিলে?
ছেলেটি বলে বলো না দাদা, পুরো এক-লক্ষ নিলো!
নেহাতই আমার পরিচয়ে তাই, হাজার দশেক দিলো।
এভাবেই তাই দিন চলে যায়, বছর দুয়েক পরে---
ফিরলো ছেলে সার্টিফিকেটটি ব্যাগের ভিতর ভরে।
এমন ভাবেই বছর দুয়েক আবার হলো পার---
আজ,
বীরেন দত্তের বাজারে চায়ের, রমরমে কারোবার।
সেই ছেলেটি রোজই আসে, হয়তো স্বপ্ন দেখা শেষ;
বললো আজকে বীরেন দাদা তুমিই আছো বেশ।
হাল্কা হেসে বললো বীরেন চাপ নিস না ভাই,
একটা কিছু ব্যাবসা কর, চাকরির আশা নাই।
এই যে তুই আমাকে দেখিস আমিও এম.এ. পাশ
বি.এড. আমারও ঝোলাতেই ঝুলে টাটকা মাছের আঁশ।
ভাবছিল কি যে আনমনে সে, তারার দিকে দেখে---
চায়ের ব্যাবসা করবে সেও পরের দিন থেকে।
এক কেটলি স্টোভ আর, একটি টেবিল নিয়ে--
বসলো গিয়ে বীরেন দত্তের বিপরীতে গিয়ে।
কান্ড দেখে বীরেন দত্ত বললো শালা পাঁশ--
আমিই দিলাম বুদ্ধি এখন আমার পিছনেই বাঁশ।