আমার শৈশব বেড়ে উঠেছে আন্দোলন সংগ্রামে,
ভাষা আন্দোললনের গল্প শুনতে শুনতে দেখেছি
ঊন সত্তরের গণঅভ্যুত্থান, অসহযোগ আন্দোলন,
একাত্তরের সাতই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ
আর মুক্তিযুদ্ধ।
পঁচিশে মার্চ পাক হানাদারদের ঢাকায় ক্র্যাক ডাউন
অপারেশন সার্চলাইট নামে চলে গণহত্যা,
লাশের স্তুপ জমে ঢাকার রাজপথে ;
বুড়িগঙ্গার পানি রক্তে লাল হয়ে যায়!
প্রতিরোধ গড়ে বাঙালিরা,
রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে যার শুরু ;
ছাব্বিশে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা শোনা গেল
চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে,
বঙ্গবন্ধুর পক্ষে মেজর জিয়াউর রহমান পাঠ করলেন
সেই ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণা।
সতেরই এপ্রিল গঠিত হলো বাংলাদেশের
অস্থায়ী সরকার,
আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দীনের নেতৃত্বে ;
জেনারেল ওসমানী হলেন বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ প্রথমে গেরিলা কায়দায়
পরে সম্মুখ সমর।
অন্যদিকে চললো পাক হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের পৈশাচিক গণহত্যা ও নারী নির্যাতন।
নয় মাসের সে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ছিল চরম বিভীষিকা
ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমহানি বিনিময়ে, মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধে ডিসেম্বরে
বিজয় যখন দ্বারপ্রান্তে,
তখন ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনী এগিয়ে আসে,
মাত্র বার দিনের সম্মুখ সমরে পরাজয় ঘটে পাকবাহিনীর।
ষোলই ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় আসে
অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশের।
চোখে দেখা সে সব স্মৃতি আজও হৃদয়কে আন্দোলিত করে,
আজও হৃদয় সিক্ত হয়ে ওঠে স্বজন হারাবার বেদনায় ;
ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
পরাধীনতার হলো অবসান,
পেলাম নিজস্ব ভূখণ্ড, নতুন পতাকা!
এলো স্বাধীনতা।