তোমার কোমল বাহুর কঠিন আলিঙ্গনের অপেক্ষায়;
রোজ কতবার শুকিয়ে গিয়েছে হৃদয়!
বেড়েছে শরীরের তাপ
তবু মেলেনি বুকের নরম ঘাসের ওম।
আলিঙ্গনের ডাকপিয়ন চলে গেছে অন্য ঠিকানায়।
রোজ শেষ বিকেলে আমি একা জানালায় -
চওড়া পাড়ের শাড়ি পরে, কাটিয়েছি যার অপেক্ষায়;
সে নীল চিঠির খাম কখনো আসেনি আমার দোরগোড়ায়।
দখিনা হাওয়ায় এলোমেলো হয়েছে সীমন্তিনী,
আমায় দূরে ডেকে নেয় যেনো মন্দাকিনী!
মাতাল হাওয়ায় ভাসিয়ে দিয়ে আসমানী রং শাড়ির আচল,
বাঁধা ঘাটে পা চুবিয়ে রাঙিয়ে দিলাম জল।
আমার লেখা নতুন কবিতা পাঠিয়েছি কাগজের ঘরে।
ছাপা হবে এবার শ্রাবণ সংখ্যায়।
জানি হয়তো তোমার পড়াই হবে না কখনো! তবুও..
আমার সকল কথা!
যা বলা যায় না কাউকে!
কবিতায় তা লিখে ফেলা যায়, নির্দ্বিধায় ;
যা ভেবে আমি চিরদিন; হয়েছি বিলীন!
বলতে পারিনি তবু কাউকে, হয়েছে কত যন্ত্রণা।
বোঝাতে পারিনি আমিতো আর যন্ত্র নাহ!
কারোর জন্য অপেক্ষায় অপেক্ষায়;-
কারোর ঘর বাধার স্বপ্ন হারিয়ে ফেলা!
পৃথিবীর সামনে যা প্রকাশ করা বারণ।
জমে থাকা কত অভিমান,
কত নোনা জলের বিসর্জন...
রাগ জমে জমে ক্রোধের পাহাড়!
যেসব দিন স্মৃতি হয়ে বিধে আছে বুকে বেদনায়!
সব যেন কবিতা হয়ে ঝড়ে যায়।
যা লিখি, জানি না তার নাম ঠিক কবিতা বলা যায় কি না!
তবে লিখে এক শান্তি মেলে।
এখানে নেই সামাজিকতার দায়,
নেই ভদ্রতার মুখোশ খসে পড়ার ভয়।
প্রচন্ড পিপাসায় হৃদয় মরুভূমি হয়ে যাওয়ার পরেও
মুখে বাঁকা চাঁদের হাসি এঁকে রাখার দরকার পরে না।
কবিতায় আমি পেয়েছি তোমায় 'তুমি' বলার অধিকার।
না কেউ দেয়নি! বা আমাকে কারও থেকে চেয়েও নিতে হয়নি।
এ অধিকার আমি নিজেই অর্জন করেছি।
এই বা কম কি?
পৃথিবীর এক অমোঘ সত্য বুঝেছি কবিতা লেখার ছলে-
'যে তারে সবচেয়ে বেশি অবহেলে,
তার জন্যই নারীর অন্তর জ্বলে!'