আমাদের পারিবারিক বন্ধুদের মধ্যে একজন আমাদের পাড়াতেই থাকে। তার সঙ্গে ছুটির দিনে মাঝে মাঝেই আড্ডা বসে আর পকোড়া, বেগুনি ইত্যাদি সহযোগে চা পান আর মজার মজার গল্প চলে।
একদিন দেবু এসে আমাদের একটা অদ্ভুুত কাহিনী পরিবেশন করল।ওদের বাড়ির আশেপাশে খুব হনুমানের উপদ্রব হয়েছে।
দেবু বলছে , ' ব্যাটাদের জ্বালায় দরজা-জানলা ত খোলা যায়ই না, একটু ফাঁক পেলেই এটা ওটা নিয়ে হাওয়া হয়ে যায়। একদিন আমার গিন্নি একটা নতুন সাবান বার করে রেখেছিল, রান্নাঘর থেকে এসে দেখে
সাবানটার মোড়কটা ছেঁড়া আর সাবানের ওপর দাঁতের কামড়ের দাগ।তার মানে ব্যাটা ওটাকে কোন ফল ভেবে দাঁত বসিয়েছিল, পরে বিচ্ছিরি লাগাতে ফেলে দিয়ে চলে গেছে।'
আমরা তো হেসে কুটিপাটি! দেবু বলল,' আরও শোনো।একদিন আমি ছাদে উঠেছি, সবে বিকেলবেলা।
দেখি একটা হুমদো হনুমান ছাদের আলসের ওপর বসে আছে।আমার দিকে একবার প্যাটপ্যাট করে তাকাল । আমি ভাবলাম, নীচের ঘর থেকে দুটো কলা এনে ওকে দেব? আফটার অল রামের ভক্ত ...
কলাদুটো সাবধানে আলসের ওপর রাখলাম।তিনি
আড়চোখে একবার সেদিকে তাকিয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।তারপর খানিক পরে কি মনে হল, একটা কলা হাতে নিয়ে দেখল।একটু শুঁকেও দেখল। দেখলাম ওর মুখটা মহা ব্যাজার। মানে কলাটা ওর মনে ধরেনি।
তাও ওটা মুখ ভেঁটকে একটু ছাড়িয়ে দাঁত বসাল।এবার মহাবিরক্ত হয়ে কলাটাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল।
আমি ত হাঁ! হনুমানে কলা প্রত্যাখ্যান করে এ আমি বাপের জন্মে শুনিনি দেখা তো দূরের কথা।
ছাদের সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আমি জীবনের চরম উপলব্ধি নিয়ে ঘরে গেলাম ।হনুমানও গাছে গাছে ঘুরে ঘুরে মানুষের থেকে খাঁটি খাবার খায় ।আমি ওকে যেটা দিয়েছিলাম সেটা ত গাছের তাজা ফল নয় বাজারের হাইব্রিড জিনিস। সেই জোরে হনুমানটাও আমাকে কলা দেখিয়ে পালাল।