ফুল ফুটেছে ফুলের বনে মরাল ভাসে জলে,
প্রভাত বেলায় ময়ূর ময়ূরী ডাকছে তালে তালে।
পেখম তাহার সাতরঙা যে আলোকেরই বাহার,
রবির আলোয় নিটেল ঘাসে খুঁজিছে আধার।
মুক্তোর মত শিশির বিন্দু সোনালী রোদে হাসে,
হরিণী চলেছে কুঞ্জ কাননে হরিণ তাহার পাশে।
তটিনী বহিছে কলকল শব্দে বাঁধিয়া নুপুর পায়,
ডাহুকডাহুকি সারারাত জাগিয়া ঢুলিছে তমালছায়।
গোঠে আনে ধেনু রাখাল বালক বাজায় তাহার বাসি,
বাউলিয়া যায় একতারা লয়ে মন হেরিতে উদাসী।
ছয় বেহারা  চলিছে লয়ে  গেয়ে পালকির গান,
আঁচল সরায়ে বালিকা বধূ জুড়ায়ে লয় তাঁর প্রাণ।
গায়ের বধূরা কলসি কাখে চলিছে জলের ঘাটে,
বালকেরা সব পড়ায় মন দেয় নিজে নিজে পাঠে।
হাট বারেতে বসবে যে হাট ঝাঁট দেয় ঝাঁটা লয়ে,
কত মেঘের বাহার উড়ে যায় সৃজন দেখে চেয়ে।
কৃষকেরা হাল  ধরিছে মাঠে নিজ নিজ কাজে।
পল্লী বাংলার সুমধুর সকাল অপরূপার সাজে,
শালুক ফুটিছে নীল দীঘিতে বাঁকা পথের ধারে,
পালোয়ানেরা তেল মাখিছে নামিতে মল্ল সমরে।
মাঝি তার খেয়া বয়ে নিয়ে চলে সাধেরও তরী,
এমনি করিয়া সকাল গড়ায়ে যায় শতবর্ষ ধরি ।
বাংলা মায়ের স্নিগ্ধ সকালে আসিয়া ঘুরিয়া যাও,
সারা জীবন ভুলিবে নাকো তাতে যত দূরেই যাও।