কতদিন মেঘ ছুঁই না,
বৃষ্টিতে ভিজি না।
বর্ষার কদমফুল চোখেও দেখা হয়নি বহু বছর।
মেঘবালিকা তোমার মনে আছে
আমাদের সেই বৈঠাডাঙ্গির মাঠ?
তোমার চোখ পাপড়ির ফুল
শালুক বিলের ঘ্রাণ
ধুলোয় মোরা সোনার গয়না গাটি।
আমাদের আকাশ ছিলো হাতের কাছে
ইচ্ছে হলে নামিয়ে নিতাম, ভাব জমাতাম
লাজুক হেসে তোমার হতাম।
সন্ধ্যে গাড়ি ফিরতো বাড়ি
ধূপ জ্বালিয়ে গন্ধ নিতাম
মনে আছে তোমার?
হয়তো নেই।
তোমার সেই জংলা বনের নাকফুল
আর বুকের বাঁ পাশের সমুদ্র
আমি যত্ন করে রেখেছি এখনও।
কতসব ব্যাকুলতা, দীর্ঘশ্বাস, নীলখামে চিঠি,
মেঠো রাস্তায় ডাকপিয়নের জন্য অপেক্ষা।
তোমাকে ছুঁয়ে দেখার হাজার বাহানা
লাল টুক্টুক ঠোঁটের কোনায় সেই রক্তজমাট হাসি
ইচ্ছে করে আবার সেই মেঘ পাহাড়ের দেশ
সেই আগের তুমি
সেই বোকা বোকা পাগলামি।
আমাকে কিছুদিন দেখতে না পেয়ে
তোমার অসহ্য যন্ত্রণাবোধ
সব। সবকিছু।
কোথায় মিলিয়ে গেলে?
এখনও অফিস ছুটি হয়
কিন্তু আমার বাড়ি ফেরার কোন তাড়া থাকে না।
নীলকান্তর ফুলের দোকানের পাশ কাটিয়ে চলে যাই
অথচ তোমার জন্য বকুল ফুলের মালা নেই না
কি আশ্চর্য আমি।
কোন একদিন ঘোর লাগা সন্ধ্যায়
আবার অদ্ভুত মায়ায় বৃষ্টি হবে
কিন্তু কিছুতেই আমার ভিজতে ইচ্ছে করবে না
একদিন দুদিন বহুদিন তোমাকে না দেখে দেখে
আমার ভীষণ অসুখ হবে
কাজলের রেখা মুছে বিষাদের বনে
গাঢ় রঙের অভিমান উড়বে।
রাত করে ঘরে ফেরা ট্রেনের শেষ হুইসেলে
আমি আবেগি হবো।
আমিও মিলিয়ে যাবো মৃতদের মতো।
তুমি চেয়ে থেকো না
যদি ইচ্ছে হয় চলে এসো আকাশের ঠিকানায়
তারারা মরে না কখনও
তাদের বেঁচে থাকতে হয় কয়েক আলোকবর্ষ।