পুরো শহর জুড়ে কাক ডাকছে।
আমি জ্যাম ঠেলে পাড়ি দিচ্ছি ঢাকা শহর
গন্তব্য শিল্পকলা একাডেমি।
সন্ধ্যের মধ্যেই পৌঁছতে হবে সেখানে।
আমাকে কবিতা পাঠ করতে হবে
অনেক জ্ঞানী গুণী মানুষের সমাবেশ
আমি নিতান্তই ছাপোষা
তার উপর দেরি হয়ে গেলে বড্ড কেলেঙ্কারি
অবশেষে আর দেরি হলো না
মিনিট দশেক আগেই আমি পৌঁছে গেলাম।
মাইকে আমার নাম ঘোষণা হলো
সিঁড়ি ভেঙে মঞ্চে উঠছি
গ্যালারির প্রতিটি চোখ আমার দিকে তাকিয়ে
নিজেকে আগুন্তক মনে হচ্ছে
আমার গলার স্বর নিষ্প্রভ হয়ে আসছে
আমি মাইক্রোফোনে ঈষৎ টোকা দিয়ে বললাম,
কেউ কেউ মরে যায় সহস্র জনতার উল্লাস ধ্বনিতে
তোমরা কি কেউ শুনতে পাও?
মুহূর্তেই বধির হয়ে গেলো পুরো গ্যালারি
কেউ কিছু শুনতে পায়নি
মনে হলো নেই এখানে কেউ।
তবু কিছু চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো
আমি কবিতা পড়তে লাগলাম
প্রতিটা শব্দ, অক্ষর যেন মাংসপিণ্ড হয়ে উঠলো
হয়ে উঠলো বুক ভেদ করে যাওয়া বুলেট,
অন্তিম সূর্যাস্ত, দূরের নীহারিকা, পলাশ বনের প্রজাপতি
আর জলরঙে আঁকা প্রিয়তমার মুখ
কবিদের কবিতা পড়তে হয় বুঝে শুনে
কিন্তু আমি তা পারিনি।
কবিতা শেষ হলো
মুহুর্মুহু করতালি চারদিক
আমি ক্ষমা চেয়ে বললাম,
কারও মন খারাপ করে দিতে চাইনি।
কেউ একজন পেছন থেকে বলে উঠলো,
কবিরা মরে যায় একজোড়া ডাহুকের চোখের পানে তাকানোর জন্য।
তাদের অতশত ভাবতে নেই।
আমি ভাবনাহীন নিয়ন আলোর শহর দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরলাম।