বনবীথির পাতাঝরা পথে মন্থরপদে হেঁটে যাই,
নিঝুম আলগা অবচেতনে মনে মনে ভাবি;
অনাব্য উপকূলের কথা। ক্ৰৌঞ্চের গভীর আবেগ,
লালমাটির সুরের ভাষা, গোলাপ-শিউলির শিহরণ;
যা বিকশিত হয়েছিল এ ছায়াকুঞ্জে, মর্মর শব্দে।
দূরে সমুদ্রবন্দরে নোঙ্গর তুলেছিল নাবিক, বিজলিআভাসে
কিনারাহীন অন্তরীপের অন্তরালে। আকণ্ঠ তৃষ্ণায়,
মিশর-সুমাত্রা-জাভা-বোর্নিওর কোনো প্লাবনতটে, ক্ষণপ্রভায়,
নিস্তরঙ্গ অভিলাষে মূর্ছিত হয় অশ্রুবালির রেখা।
নক্রের দন্তস্ফালনের হিংস্রতায়, বাক্যবিহীন মৃত্যুর গন্ধে,
মজেছিলো নীলনদের জল, উছলি উছলি পশ্চিমা বাতাসে।
নবজন্মা শিশুর মত আমার মনে জেগেছিলো বিস্ময় -
বিস্ফারিত চোখের তারারন্ধ্রে। সীমিত উজ্জীবতার শিহরণে
মানবীয় বিস্তারের পদার্পণে, অস্মারকুমারীর অঘোর আলিঙ্গণে,
দ্রাক্ষাক্ষেত্রে বিন্দু বিন্দু ঝরেছিল পুষ্পরস, ভ্রমরের প্রতীক্ষায়।
অলীক চিন্তায়, ধানশিষের সোনালী অগ্রের প্রিয় দোলায়,
ফুটে ওঠা মঞ্জরীর নীলাকাশের বুকে বৃদ্ধির অনাবিল আনন্দে।
সোঁদা টিউলিপের মাটিভেজা ঘ্রাণে ঘনিয়ে এসেছিল বসন্তাভাস,
কাঞ্চনদ্যুতি আলোকমালায় প্রাণের মিলনে, অবাধ সঙ্গমে।
কবরী সাজানো মায়ামোহিনীর ঘুঙুর পায়ে, চন্দ্রিমা-মুকুলে
বেণুলতায় বেণুলতায় ফাল্গুনী আবহনী রেশ, মহুয়ামিলন কালে।