আনন্দোচ্ছল নয় এ এলাকা, স্বদন্তসংকুল;
কাঁটাতারের ঘেরাটোপে শামিয়ানায় এ শিকারী জীবন।
রাইফেল গর্জে ওঠে, দুরু দুরু কাঁপে ধরিত্রী,
অযাচিত ক্রোশ বক্ষে নিয়ে মাটিতে লুটে নগ্ন সিংহ;
ভূসরে মিলিয়ে যায় ফিনকি ফিনকি নিষ্ঠিবিত রক্ত।
চন্দ্রমল্লিকার গর্ভকেশরে হয় গর্ভপাত, আনাচে কানাচে
হিংস্র সর্পিল ছায়াকুন্ডলী ম্যাগনোলিয়া বনে মিশে যায়।
লতাগুল্মঝাড়ে বিচলন, অনবলোকিত স্পর্শের চাহুনি,
ক্যাকোফোনি মিশায় ওই আকাশে অ্যাকাসিয়া গাছে,
মহাকালসর্পবেষ্টনে নির্গত সহস্র নশ্বর ক্ষুদ্র জীবন।
একঝাঁক তিতির, বটের, হরিয়ালের হরিয়ালিতে
অহরহ প্রগাঢ় নিস্বনে বনদেবী অস্পষ্ট সংকেত দেন।
পশ্চিমাকাশে অগ্নিবলয়ের কিরণ দীর্ঘায়িত হয়;
আছড়ে পড়ে পীতাভ-কৃষ্ণ ডোরাকাটায়, অনুরাগে;
ঠিকরে বেরোয় স্বর্ণস্পষ্ট দোদুল্যমান দ্যুতি, অন্বেষণে;
ভয়ার্ত দৃষ্টির, মৃগয়ার শিকার অনুসন্ধানে, লোলুপ চোখে।
পুঞ্জীভূত মেঘ, বুলেটশীর্ষে কাষ্ঠরস, শূন্য ব্যারেল আর কার্তুজ;  
শিকারির বুক শঙ্কা সিন্দুক, তোলপাড় হয় প্রতীক্ষায়, নখরের;
তীক্ষ্ণ দন্তের; তঞ্চিত তরলের প্রত্যাশায়; বিদীর্ণতার আকাঙ্ক্ষায়।
তবুও শেষবার; আঘাত আসবার আগে, শূন্যকুক্ষি রাইফেল;
বিস্ফারিত উদ্দীপনায়, নিয়তি আঘাতের আশু মুহূর্তে,
দেগে ওঠে, একবার, দুবার, তিনবার। অধিবৃত্তাকার গতিতে
ছুটে যায় আলোর তেজ, দুরারোধ্য অপলক দুর্নিবারে।
বনানীর রূপ-রস-বর্ণ নিলীন হয়, বন্ধ্যা পরিত্যাজ্য বর্ণমালায়।