চারিদিকে মৃত্যু যন্ত্রণা,
ধংসের মিছিল।
লাশ পচা গন্ধ,
কান্নার রোল।
ইংল্যান্ড-ইতালি-আমেরিকা ঘুরে,
হাহাকার পৌছে গেছে,
দিল্লি-মুম্বাই-কলকাতার রাজপথে
প্রতিটি জনপদের অলিতে-গলিতে।
থমকে গেছে জনজীবন,
থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি।
খাদ্যের অভাব,
পানীয়ের অভাব,
চিকিৎসার অভাব।
রাজাও আজ অসহায়,
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ভেন্টিলেশনে,
স্পেনের রাজকুমারী টেরেসার দেহ পড়ে আছে মর্গে।।
সৎকারের উপায় নেই,
সংক্রমণের তীব্র ভয়।।
দুধের শিশুটি চোদ্দ দিন মা কে ছুয়ে দেখেনি,
কোয়ারেন্টাইনে থাকা মা,
দূর থেকে ছেলেকে দেখে কান্না লুকিয়ে চলেছে।।
কান পাতলে শোনা যাচ্ছে,
সন্তান হারা জননীর বক্ষফাটা চিৎকার,
পিতৃ হারা কন্যার নিদারুণ অসহায়তা।।
টেলিভিশনের পর্দায়,
ক্রমাগত বেজে চলেছে সাইরেন।
সতর্কবার্তা,
ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে ডিপিতে,
Stay Home and Save Live ।।
কর্মব্যাস্ত পল্লিটাও আজ নিস্তব্ধ,
আচমকা শুধু এম্বুলেন্স আর,
পুলিশের জীপের আতঙ্কিত শব্দ।
এই বুঝি......!!!!!!
প্রতিদিন হাজারে হাজারে মৃত্যু ,
লাখে লাখে বাড়ছে সংক্রমন।
কাল দেখলাম ;চোদ্দ লাখের বেশি সংক্রমণ,
আজ ষোল লক্ষ।
মৃত্যুর সংখ্যা একলাখ ছুই ছুই।
ফ্রান্স-ইতালি-স্পেন কে হারিয়ে,
আমেরিকায় বেড়ে চলেছে মৃত্যু মিছিল।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল,
আর গরীব দেশটা অপেক্ষা করছে মুক্তির।
সাত হাজারের বেশি সংক্রমণ,
তিনশত এর কাছাকাছি মৃত্যু।
স্কুল-কলেজ, অফিস আদালত শুনশান পড়ে আছে,
স্কুল-রেল গাড়ি বদলে যাচ্ছে অস্থায়ী হাসপাতালে।
টাটা-আম্বানি, সৌরভ-শারুখের দানে,
ত্রান তহবিল তৈরি হচ্ছে।
দীপ জ্বালিয়ে-কাসর বাজিয়ে ;মনোবল বাড়িয়ে,
এক সাথে লড়ছে একশো ত্রিশ কোটি ভারতীয়।
লড়াইটা সহজ নয়,
রাজার-ও আজ অগ্নিপরিক্ষা।
ছত্তিসগড়ে মাওবাদী হামলায় সতেরো জওয়ান শহীদ।।
কাশ্মীরের রাজৌরি সেক্টরে ceasefire-এ শহীদ সেনা,
আতঙ্কবাদীরা বেছে নিয়েছে "করোনা" নামক মানব বোমা।
ধর্ম আর কুসংস্কারে আচ্ছন্ন জাতি আজ বিজ্ঞান ভূলতে বসেছে,
চিকিৎসক-নার্সদের সাথে দুর্ব্যাবহার বেড়েই চলেছে।
ভিয়াইপি ট্রিটমেন্ট না দিয়ে করোনা ছড়ানোর হুমকি হচ্ছে,
শক্তিধর মিত্র দেশ আমেরিকাও হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন চেয়ে ভয় দেখাচ্ছে।
অনুপ্রবেশ আর চোরাচালান বন্ধ করতে বিএসেফের ঘুম গেছে,
কালোবাজারি রুখতে টাস্কফোর্স গড়তে হচ্ছে।।
এখনো কমছেনা রাস্তা-বাজার-মন্দির-মসজিদের ভিড়,
রাজনৈতিক বিবাদে মহামারী আজ ক্ষমতা দখলের মারণ তীর।।
মাসের পর মাস লকডাউন,
বুভুক্ষু মানুষ খেতে না পেয়ে মরছে।
ঘরে থাকলেও মরছে,
ঘরের বাইরে বেরোলেও মরছে।।
ফুটপাতের শিশুটির পিতা আজ বড়ো অসহায়,
কর্পারেশনের খাবারের গাড়ির অপেক্ষায় তার মা।
সারাদিন রোদে দাঁড়িয়ে রেশনের চাল আর আটাই ভরসা,
তাও কতদিন চলবে আর ;কে জানে!
এর মধ্যেই কালোবাজারি,
রেশনের ডিলার,
পাড়ার নেতা,
ছিচকে মাস্তানটা,
এমনকি মুদি দোকানী।
যে যার মতো শুশে নিচ্ছে অসহায় গরীব মানুষ গুলোকে।।
দেখলে বুঝবেন না,
এরাই আবার দশ টাকা চুরি করে,
এক টাকা বিলিয়ে মহান সাজছে।
মাস্ক বিলি করছে ফেসবুকে,
কিম্বা একবেলার খাবারের রসদ।।
সত্যিকারের দরদী ব্যাক্তিও আছেন অনেকেই,
তবে খুঁজে পাওয়ার উপায় নেই।।
"অসতো মা সদগময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ
ওম মৃত্যর্মা অমৃতমঃ গময়ঃ শান্তি শান্তি ওম"।।
একদিন শান্তি আবার আসবে ফিরে,
পৃথিবী আবার স্বাভাবিক হবে।
পরিবেশের রিফ্রেশমেন্ট চলছে,
ইউরোপের রাস্তায় রাস্তায়,
নীরিহ প্রানীরা ঘুরছে।
আন্টার্কটিকায় ওজোন হোল,
আবার সাম্যাবস্থার দিকে যাচ্ছে।
দিল্লির দূষণ অনেকটাই কমেছে,
দূর থেকে হিমালয়ের তুষার শৃঙ্গ দেখা যাচ্ছে।
পাখিরা নীরাপদে বাসা তৈরী করছে,
জনপদের পাশে ঘাসের বন তৈরী হচ্ছে।
নতুন ভাবে সভ্যতা সেজে উঠছে,
মানবজাতির এতেও কি শিক্ষা হবে!!!