আষাঢ় গেলো,
শ্রাবণও গেলো।
চৈত্রের দুপুরে,
অবশেষে একদিন বৃষ্টি এল,
দমকা ঝড়ের সাথে এল সে।।
ঝড় সব কিছু তছনছ করে দিয়ে গেল,
আর বৃষ্টি ভাসিয়ে নিয়ে গেল সব কিছু।।
তবুওতো সে এল!
জমে থাকা স্মৃতির ময়লা গুলি,
ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেল।
ঘন ঘন বজ্রপাতে মৃত্যু হলো বার বার,
কালো মেঘের গম্ভীর শাসানিতে থমকে গেল জনপদ,
চারিদিক কালো অন্ধকারে ঢেকে গেলো,
ঝড়ের দাপটে বসতির ছাদ উড়লো,
গাছের ডাল ভাঙল,
উপরে পড়লো বহুদিন শিকড়েবাঁধা অশত্থ।
পাখির নীড় খসে পড়লো,
মাটিতে পড়ে জন্মের আগেই মৃত্যু হলো শাবকের।
নদী ভরল-নালা ভরলো,
ডোবাটা আর ডুবলো না।।
তবুও বৃষ্টি এল!
বৃষ্টি এল,
শান্তির বৃষ্টি এল।
বহু বছরের প্রতিক্ষিত সে বৃষ্টি এল।।
তোমার চুল ভিজলো,
নখ ভিজলো,
ঠোঁট ভিজলো।।
তোমার চোখের জল বৃষ্টির সাথে মিশে গেল,
সে জল এখন নদী হয়ে সমুদ্রে যাবে,
সূর্য তাপে বাস্প হবে।।
তোমার চিবুকে লাগলো একবিন্দু জলকনা,
আবেগি হলে তুমি,
সাজানো বিছানাটা খাট থেকে নীচে নেমে গেলো।
এক পুরুষের কপাল চিরলো তোমার নখে,
বুকের উপরে তোমার দাতের দাগ বসলো।।
বাইরের অশান্ততা,
দমকা বাতাস-বিজলির চমক,
কোনটাই ছুতে পারলো না তোমায়।
বৃষ্টি এল,
বৃষ্টি এল,
শীতল হলো সব,
দুঃখ ভূলে,
ঘুমিয়ে গেছে,
ব্যার্থ প্রেমিক হয়েছে আজ,
জীবন্ত লাস।
কি শান্তির ঘুম,
বহু বছর সে ঘুমায়নি।
ঘুমাতে পারেনি,
প্রচন্ড দাবদাহে ছটফট করছে,
তার বুকের লোম পুড়েছে,
তার ঠোঁট রুক্ষ হয়ে গেছে,
ঘামে ভীজে ভীজে গলে গেছে তার পুরুষালি শরীর।
আজ তার অনেক শান্তি,
ঝড়ের দাপটে তার কিচ্ছু যায় আসে না,
ভাসিয়ে নিয়ে যাক সব,
তার কিচ্ছু যায় আসে না।
ভ্রুনের শিশুটির মৃতদেহের চিতকার তার ঘুম ভাঙাতে পারবে না,
ধংস স্তুপে হারিয়ে যাওয়া মায়ের হাহাকার তার ঘুম ভাঙাতে পারবে না।
সে এখন ঘুমাতে চায়,
অনন্তকাল ধরে ঘুমাতে চায়।
শান্তির ঘুম।
সস্তির ঘুম।।