মাঠের ঈশান কোণে একপায়ে
অনাদরে দাঁড়িয়ে শিউলি গাছটা,
সারা বছর কেউ খবর রাখে না,
একা, বড্ডো একা-
ভোরের স্নিগ্ধতা মেখে একদল শিশুর
হুটোপুটিতে মুখরিত শিউলিতলা।
কুয়াশার চাদর থেকে ফুল কুড়ানোর
প্রতিযোগিতায় ওরা ব্যস্ত;
ওরা ব্যস্ত এলাকা দখলের!
একান্ত নিজস্ব সৌরভ অকাতরে
বিলাতে বিলাতে আপন মনেই হাসে,
স্বার্থপর মানুষগুলো যে তার অনেক দিনের চেনা!
নিষ্পাপ শিশুদের ভালোবাসায় আবেশিত শিউলি
কানে কানে বলে-শরৎ এসে গেছে! মা আসছেন!!
অচিনপুরের নাম না জানা গাঁ থেকে ভেসে আসা
শ্বেতশুভ্র মেঘের ভেলাগুলো পুলকিত হয়ে
বারি সিঞ্চন করতে করতে বলে ওঠে-
শরৎ এসে গেছে! মা আসছেন!!
নদীর পাড়ে অনাহূত কাশের দল,
সভ্যতা যাদের স্পর্শ করেনি,
নির্লজ্জ লোভী মানুষের হাত যাদের দিকে প্রসারিত হয়নি,
অবাঞ্ছিত সেই কাশের দল-
সারারাত্রি প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করে ভোরের সুশীতল বাতাসে
দোলা খেতে খেতে সোহাগি গলায় নদীর কানে কানে বলে-
শরৎ এসে গেছে! মা আসছেন!!
কুমোর পাড়ায় মহাব্যস্ততা,
এক মেটের পর দুমেটেতে হাত লাগানো
পালবাবুর কানে কানে ফিসফিস করে বাতাস বলে-
শরৎ এসে গেছে! মা আসছেন!!
পিটির পিটির বৃষ্টির কণা
হঠাৎ এসে ভিজিয়ে দিয়ে দুষ্টুমি হাসি হেসে বলে-
শরৎ এসে গেছে! মা আসছেন!!