কু ঝিকঝিক গাড়িটা,
যখনই এই সময় বাঁশি বাজায়,
মনটা কেঁপে উঠে বলে,
এই তোমার আসার সময় হ'ল।
যেন দেখতে পাই ~
ইষ্টিশনের বেঞ্চিতে বসে আছি আমি ~
আর তুমি ঝিকঝিক গাড়ির দরজায়,
স্তম্ভ ধরে দাঁড়িয়ে,
এদিক ওদিক দেখছ।
হয়তো খুঁজছ,
তোমার অতি পরিচিত মানুষটাকে!
সন্ধ্যার মুখোমুখি,
গভীর অস্তাচলগামী সূর্যের শেষ স্পর্শে,
তোমার মুখটি,
রক্তিম আভায় ভরে গেছে।
খোলা চুল হাওয়ার স্পর্শে,
ইতস্তত উড়ে উড়ে পড়ছে তোমার মুখে।
তুমি অস্বস্তিতে, বারে বারে তোমার রেশমি কোমল চুল,
বৃথা সামলানোর চেষ্টা করছো।
আমি বেঞ্চি হতে,
নিষ্পলকে তোমার অরূপ রূপের আস্বাদ নিচ্ছি।
তুমি নামলে,
যেন আমার দুনিয়ায় অবতীর্ণ হ'ল এক পরী,
ভীন গ্রহ থেকে।
সে পরী চঞ্ছল, সে পরী অস্থির!
আমি লাঠির ভরে উঠে দাঁড়িয়ে,
চাইব তোমার বড় বড় হরীণি চোখের পানে।
তুমি কি তোমার মধুর ঠোঁটে,
মোনালিসার মিষ্টি হাসিটি হাসবে?
আমার অচেতন মনে,
আবার বাজিয়ে গেল বাঁশি,
সেই ঝিকঝিক গাড়ি!
ইষ্টিশন হতে ইষ্টিশনে,
সে যাচ্ছে পৌঁছে আপন সওয়ারী নিয়ে ~
তুমিও এমনই এক ইষ্টিশনে নেমে,
চলে যাবে হনহনিয়ে,
ভূগর্ভস্থ পথের মধ্যে দিয়ে!
তোমার চিন্তায় তখন ক্লান্তি ;
অবসাদ নিয়ত কেরানী জীবনের!
দু' চোখে ভাসবে শুধু,
পরিচ্ছন্ন বিছানাটা,
ক্ষণিক শ্রান্তির আশায়!
আসবে না মনে কোনো,
অলিক স্বপ্ন দেখা,
এক পঙ্গু প্রেমিকের ছবি।
তোমার দু' চোখে তখন ঘুম ~
অযাচিত স্বপ্নজাল ফেলে,
বাস্তব্য চিরাচরিত কাঠামোয় গড়া,
আগামী দিনের চিন্তায় তুমি,
আবার নবোদ্যমে ছোটার আশায়,
বাড়ীর পথে উন্মুখ।
ঝিকঝিক গাড়িগুলো দেখো,
কত অকল্পনীয় স্বপ্ন সাজিয়ে যায়,
তোমার এই পঙ্গু প্রেমিকের চোখে ;
ওদের থামার কোনো সংকেত নেই...