চোখ বন্ধ করলেই স্পষ্ট দেখি একটা বালির রাস্তা।
সাদা বালির দুপাশে ছোটো ঝোপ-ঝাড়,
মাল বোঝাই মোষের গাড়ি, চাকা ডুবে গেছে তার,
গারোয়ান কালো মোষ দুটোকে পিটিয়ে চলেছে কেবল,
তার পাশেই টিনের চালা, মুল্লি বাঁশের বেড়ায় বাঁধা
একটা দো-চালা বাড়ি, উঠোনে লতানো বরবটি গাছ,
এক মা, সকাল থেকে হাঁটু সমান গর্ততে পা ডুবিয়ে –
তাঁত বুনে চলেছেন, রান্না ঘরে উনুনে আগুন,
মাকু সুতো নিয়ে একবার ডান, একবার বাম দিকে
ছুটে চলেছে নিপুন দক্ষতার সাথে, শাড়ি বোনা হচ্ছে,
মাটির উনুন, দাহ্য বলতে শুকনো পাটকাঠি
কড়াইয়ে রান্না হচ্ছে, তাঁতে ফুটছে শাড়ির নক্সা
ঘরের বাইরে উঁইয়ের ঢিবিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভেবে
একটা পাগলা ষাঁড়, তার শিং দিয়ে ওটা
গুঁড়িয়ে দেবার ক্রোধে মত্ত,
মেস্তা ক্ষেত থেকে হাওয়া ভেসে আসে,
দমকা উতাল খাম খেয়ালি এক হাওয়া,
ঘাসের উপর শুকোতে দেওয়া একটা লাল শাড়ি,
গোল গোল করে নীল আকাশে ঘুরতে থাকে,
সঙ্গে জোটে দু-একটা ছেড়া কাগজের টুকরো,
মোষে টানা গাড়িটা কখন অনেকটা দূরে চলে গেছে,
শুধু চোখ বন্ধ করলেই সাদা বালির রাস্তাটা দেখা দিচ্ছে।
*গদ্য/নঞ ছন্দ
© সন্তোষ দেবনাথ ১৯-০২-২০২২