গাড়ি ছুটে চলেছে-
হাজার নগর ঠেলে- বন্ বন্ করে
ঘুরছে তার চাকা।
পিছনে ফেলে রেখে ট্রাম-বাস-ট্যাক্সি-
ইটের পাঁচিল-লোহার ব্রিজ-প্লাস্টিকের খেলনা।
বিকেলের রোদ ডালে-পাতায় মেখে নেয়-
সরষের ক্ষেতে স্থির চোখে কাকতাড়ুয়া হাসে
একা একা- টান করা খড়ের দু’হাত
দাঁড়িয়ে থাকে এমনি করে সর্বদা-
কী শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা।
গাড়ি ছুটে চলেছে-
হাজার মাইল পথ বেয়ে-
হাজারো কথা বুকে নিয়ে গ্রামের
চাচা ঘাড় গুজে কাজ করে চলে একমনে;
সকাল-বিকেল-রাত গড়ায়- চাষির দল
গাঁয়ে ফিরে যায়- রেখে কিছু কথা ক্ষেতে;
কিছু তুলে নিয়ে গিয়ে ঘর সাজায়।
এ’গ্রামের ক্ষেত, চাষির লাঙল, সেঁজুতি ফুল
রাখে নাকো খবর গ্রামান্তরের- রাখে নাকো খবর
অন্য কোন গ্রহের। শুধু তারা ঘাটের জলফেনা
গোনে, তাদের ফসলের আড়ত করে
জীবন উদ্-যাপন করে...করে চলেছে।
গাড়ি ছুটে চলেছে-
রাস্তার ধারে কাদামাখা উলঙ্গ
শিশুর দল- খেলে খালি ঘর ঘর-
কী বা জানে ঘর কারে কয়?
পাথর নিয়ে হাতে সারাদিন
ঘুরে ঘুরে খেলে, ছোঁড়াছুড়ি করে।
সন্ধ্যা ঘনালে মা তাদের ফেরে বাসায়-
অন্ধকার হয়ে যায় দিনশেষে- বাড়ি বাড়ি
কাজ করে এসে মাতাল স্বামীর কাছে লাথি-ঝাঁটা
মজুরি পাওয়া। আবার সকালে
তারই মঙ্গলার্থে ফুল-বেল চড়ায়...চড়িয়ে চলেছে।
গাড়ির বন্ধ কাঁচের ফাঁক দিয়ে
মালিক একটু হাসে; দু’ফোটা কাঁদে-
আবার ঠাণ্ডা জলে হীমশীতল নিঃশ্বাসে
দির্ঘশ্বাস ছেড়ে রেখে চলে যায়। চলেছে
গাড়ি জোরে- বড় জোরে...
বাঁধান কঙ্-ক্রিটের রাস্তা ধরে।