অশ্বত্থ-হিজল, ঘুঘু-ডাকা চৈত্রের দুপুর
আম জাম আর কাঁঠালের বনে,
গ্রামের সেই হালট ধরে যখন হাঁটি
শুধু তোমাকেই মনে পড়ে
বাজান শুধু তোমাকেই মনে পড়ে।
কবেই শূন্য হয়ে গেছে
তোমার সেই গীরস্থ বাড়িটি
নদীতে নেই খেয়া নৌকা,
তুলা তুলতে,
আসে না আর গুইনা মাঝি।
চুল কাটতে আসেনা আর
পাশের গ্রামের সেই নরেন্দ্র শীল।
লাঙ্গলের ফাল লাগাতে
এখন আর ডাক পড়েনা
সেই নারায়ণ মিস্ত্রিরির।
বড় বড় মাটির হাড়ি মাথায়
দেয় না হাঁক
কুমার পারার সেই-সরল লোকটি,
যত্ন করে নেয় না কেও
চিটা ধান
বিনিময়ে বড় বড় হাড়ি পাতিল।
বাজান আজ বড় বেশি মনে পড়ে
চাচি কাক্কু আর কামলাদের কথা।
বৃদ্ধা মা আজ প্রশ্ন করে
কেন মাড়াই হয়না তাঁর ওঠানে
ধানের আঁটি।।
কেন হয় না রান্না
তাঁর চুলায় ডাল ভাত ডেকচিপুরি
কেন খায়না সে ভাত কামলারা
ওঠানে বসি।
নির্বাক চেয়ে থাকি
উত্তর কিছু নেই বাজান,
আর তখন শুধু তোমাকেই ভাবি।
তোমাকে কেমন করে ভুলি!
তুমিতো ছিলে নিবিড় বটের ছায়া
এক ঘন বাঁশবন।
তুমি তো গ্রামের সেই প্রিয় মেঠোপথ
সোনালি ধানক্ষেত
চৈত্র মাসের দক্ষিণের হওয়া
তুমিতো পল্লী গীতির সেই লম্বা সুর
মুয়াজ্জিনের আজানের মধুর ধ্বনি
যেই আজানেই শুরু হয় দিন
আর শেষ হয় আঁধার রাত্রি।।