হাফ প্যান্ট আর স্বাধীন রঙ্গের শার্ট ছেড়ে
নিজেকে যখন আবিষ্কার করলাম
নির্বাচিত সাদা শার্ট আর নেভি-ব্লু প্যান্টে,
তখনও আঁকা বাকা মেঠো পথ
দু’ধারে ঘন জঙ্গল, আর ধান ক্ষেত
মাড়িয়ে যেতে হতো স্কুলে ।

ঐ সর্পিলাকার মেঠো পথ
ছেড়া ঘাসের গালিচা,
দু‘ধারে জলাধার,
এসব কিছু পুলকিত করেছে আমায় বহুবার।
কখনো ইচ্ছে ঘোড়ারতে দু‘ক্রোশ মাড়িয়ে
ছুঁতে গিয়েছি মিছে দিগন্ত
পুঁজিবাদ আর নগরায়নের আগ্রাসন
ঘটেনি এখানে।
এখানে চলেনি তখনও কোন পুচ্ছ নির্গত
সালফার আর কার্বনের কলের গাড়ি।

স্কুলের মাস্টার মশাইয়ের সাথে
অভিবাবকগণের যে অদৃশ্য চুক্তিপত্র হতো
তা নিঃসন্দেহে হৃদয় বিদারক।
তবুও ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্ক ছিলো
ঝিনুক আর মুক্তার মতো।

স্কুলের গন্ডি পেড়িয়ে যখন বিদায়ক্ষণ
এসে হাজির হতো যমদূতের মতো
তখনও আয়োজন হতো-
জিলাপি আর মিষ্টি বিতরণ পর্ব হতো।
সব শেষে যখন আশির্বাদের হাত মাথায় রেখে
শিক্ষকগণ বলতেন, পরিক্ষার আর
যে ক‘দিন বাকি আছে ভালো করে পড়বি
তখন চোখ বেয়ে কান্না আসতো
বিচক্ষণে যখন দেখে নিতাম দেব মুখ
তখনও তা অশ্রুসিক্ত থাকতো
এ যেন ঝিনুক তার বুক থেকে
স্বেচ্ছায় মুক্তা খুঁচি খুঁচিয়ে বের করে দিচ্ছে।

এখন মেঠো পথে পড়েছে
আধুনিক সভ্যতার আস্তরণ
জলাশয় হয়েছে মানব বসতি।
তবে এখন ইচ্ছে করলেও
স্কুলের ভেতরটা অনুভব করা দায়
তবে বিদ্যাপিঠের ছাত্রদের দেখলে
কিছুটা আঁচ করা যায় এর ভেতরটা
কেমন হয়েছে,কেমন আছেন শিক্ষকগণ ------




সলংগা, সিরাজগঞ্জ
১০/০৫/২০২০