কবিতার ঘটনারা কবিতার মতোই থাকে। আসরের কথায় আলাদা করে কবিতা পরিবার খোঁজে না। কিছু শব্দ কখনই কবিতায় বাঁচতে শেখাতে পারে না। শব্দরা মন ভাল করতেও পারে না। নতুনত্ব আচম্বিতে আসে। বলে যায় আমি তো আমি পারিনি। আসলে মন ঈর্ষান্বিত হয়। তাই অন্যের সৃষ্ট কবিতা ঈর্ষা মনকেই জাগিয়ে দেয়। মানুষ হল উন্নত জন্তু। মানুষ তাই আদিম রূপটাকে নতুন প্যাকেজে সামনে আনে। কবিতা এই পথ ধরেই এগিয়ে চলে। সকলে তা বোঝে না। সকলে তা খোঁজে না। চেতনার এক অনন্যরূপ। অপূর্ব। কবিতা আমাকে শিখিয়েছে এই সব। কবিতা বলেছে প্রকাশক হয়ে বোকা বানিয়ে দাও, মুনাফা লুটে নাও। ঠকাও। কবিতা আমায় সম্পূর্ণটাই দেখিয়ে দিয়েছে। কবিতা তাহলে কী!!
.
কবিতা হল জীবনের দিশা। এই কবিতা সবটুকু জানে। কবিতারাই ঈর্ষা, শ্রদ্ধা, ভালবাসা, ব্যবসা সবটা শিখিয়ে দেয় কারণ কবিতা পথের দিশারী। কবিতা এমনই এক চেতনা যাতে ভর করেই শ্রুতি থেকে লেখ্য হয়েছে ভাষা। লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন মহাভারতে পূর্ণচ্ছেদ আছে তবে কমা, সেমিকোলন, কোট এসব নেই। কারণ মহাভারত রামায়ণ যে শ্রুতি। শ্রুতি লেখনির এতটাই শক্তি ছিল যে কাব্য ছন্দে তা মানুষের স্মৃতিতে গাঁথা ছিল। পরে তা পড়ার মতো করে ছাপা হয়। কবিতা এতটাই প্রাচীন। কবিতা সব জানে। আজ আমি যা, আমি যা নই সবটা জানে। এই যে আমার রাগ, আমার দোষ, আমার অপরাধ সব কবিতা জানে। কবিতা সমস্ত চেতনার, চেতনা অভিলাষের মূর্ত রূপ। তাই কবিতা থাকবে। আমরা আমাদের সফলতা ব্যর্থতা নিয়েই চলে যাব।
.
কবিতার জন্য নয়, আমি আমার জন্য ব্যর্থ। আমি আমার সমস্ত চেতনায় ব্যর্থ। তাই কবিতা কেউ ভালো বলল কি না আমার আর যায় আসে না। যখন পুরস্কার পাওয়ার তখন লাথি খেয়েছি। তাই নতুন করে কিছু চাই না। কবিতার কাছে অনেক জীবনের ঋণ, সেই ঋণ শোধ করে যাচ্ছি। কবিতা আজ বিকিকিনি হয়েছে কিন্তু আমার কাছে তা সত্য জীবন। আমি কবিতা লিখতে পারিনি, নতুন যুগের পরাবাস্তবতা খুঁজিনি, দল করিনি তাই সকলে হেসেছে। কিন্তু আমি চুড়ান্ত ভাবে কবিতাকে বুঝেছি। কবিতা প্রচন্ডভাবেই মানুষের কথা। মানুষের প্রতিবাদ। তোমরা সে কথা বলতে পারো নিই বলেই কবিতা লিখছ। কবিতা দেখছ। কবিতা পড়ছ। নতুন শব্দ বা পুরাতন অপরাধ নয়, কবিতা সকলের নয়, কবিতা সকলের হতে পারে না। কবিতা চিরকালীন এক মণি। এক কোহিনুর। সকলে ছুঁতে পারবে না। তাই সকলের কবিতার মিথ একদিন ক্লান্ত হবে। সাহিত্য থেকে যাবে কবিতার জন্য, আর কবিতা থাকবে সাহিত্যের। আমাদের মতো মিথ্যা মানুষ অবলুপ্তির পথেই যাবে। কারণ যাকে ছোয়া যায় না, তা কখনই সম্পর্ক চিরকালীন করতে পারে না। চিরকালীন সম্পর্কের বন্ধন তাকে স্পর্শ করা। এটাই অপরাধ কবিতাকে এই স্পষ্ট কথা বলে দিলাম। তাই কবিতা আমার স্বরূপ চিনে নিল। এবং বলে দিল কবিতা কখনই তোমার হবে না। তুমি কবিতাকে ভালইবাসোনি...আপন ভাবো নিই। শুধু নাম, যশ, খ্যাতি ভেবেছ...তাই নয় কি পাঠক!!