আমার নিশ্বাসগুলো লতার মতো করে স্তনপান
বীর্যকথন যাই বলুক প্রকৃতি ছন্দে করবই স্নান।
.
দীর্ঘকালীন সবুজের পথ। সেই পথ বেয়ে এগিয়েছে সব চরিত্র। প্রকৃতির রূপ-রস-গন্ধ অবশ্যই গায়ে মেখেছে। না হলে কী মাধুকরি ভালবাসার দান মেলে। এখনকার বিপননী ভ্যালেন্টাইন রোজ যাপিত হয় না কেন! আসলে প্রতি সকালের ঘুম ভাঙা ভালবাসা প্রকৃতির ঐ ফুলগুলো দিতে পারে। যারা ইঁদুর দৌঁড়ে দৌড়াচ্ছ একদিন বিশ্ব পরিবেশ দিবস ভাবছ...তারা সত্যই বিশ্ব কেন ঘরের সবুজদেরই রক্ষা করতে পারবে না। ঘর থেকে বেরিয়েই দেখতে পাবে সবুজ উদ্ভিদ। দেখতে পাবে নতুনের উদারতা। দেখতে পাবে ভাবনাহীন এক আকাশ ঐতিহ্য। তবু শিখবে না। শুধু একদিন শুভেচ্ছা জানাবে। একদিন ম্যাসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ করবে। এসবের মধ্যে সত্যিই আমি কবিতা পাইনি। সে সব কবিতার বড়ো বেশি স্মার্ট। কোট আনকোটের বাক্য গঠিত কবিতা। সহজবোধ্য না। ভাষা সহজবোধ্য না হলে চিরকালীন হতে পারে না। রবি ঠাকুর আধুনিক সে অর্থে ছিলেন না। কিন্তু ওনার ঐ ছন্দ, ছন্দ গদ্য আধুনিক সমাজের থেকেও অনেক এগিয়ে। বিশ্ব ভরা প্রাণ, আকাশ ভরা সূর্য তারা...বিজ্ঞান যা বলে উনি ছন্দ লয়ে তাই বলেছেন। কবিতার মাহাত্ম সেখানে। এখনকার ব্যান্ডের কবিতারা তাই দীর্ঘকালীন হতে পারল না। দু-একটি গান শুনশান বাইপাসে তোমায় দিলাম রডোডেনড্রন বলতে পারে। তা তো কবিতা হয়ে ওঠে না।
.
দীর্ঘকালীন সে সুখ সব জন্মে পাইনি গবেষণার মতো
প্রকৃতির কোলেই রেখে যাব লিখে এ জীবনের ক্ষত।
.
আসলে কবিতার প্রকৃতি তো নীরার মধ্যে ছিল বলেই অবনি বাড়ি আছো কিনা জানতে চেয়েছিল রহমৎ। খোকি ..খোকি...সেই কাবুলিওয়ালার চোখে ভেসে আসে অপু দুর্গার ট্রেন, টেলিগ্রামের শব্দ। যদিও কেউ কথা রাখে না তবু আজও এই গাও চেয়ে রয় ঐ গাওটির পানে...নিমন্ত্রণ তো জসীমুদ্দীনের মতো আমি দিতে পারিনি। তাই প্রকৃতিকে সওগাত দেওয়ার মতো কাব্যগুণ সত্যচরণের মতো আমার নেই আরণ্যক। অরণ্যের সেই লবটুলিয়া পাহাড়, ঋজুদার সেই অব্যর্থ টিপ, মেমসাহেবের সেই উদার করা শরীরের লতা পাতা আমায় কবিতার কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতি সুখী করতে পারছে না। তাই কবিতার উপত্যকা কেবলই হাতছানি। তবু আমার মনের মধ্যে যে চাল ফুটছে...সে চাল একদিন ভাত হবেই। অনেক গ্লুকোজের কথা বলছি না। বলছি আমিও বীজ ভক্ষণ করব। সে বীজ হল কবিতার বীজ, সে বীজ হল প্রকৃতির বীজ। আর সেই বীজের খোঁজ মিউজিয়ামে মিলবে আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পর। সত্যিই তো আমরা যে ভাবে প্রকৃতি ধ্বংস করছি তাতে এখনকার খাদ্যাভাস তখন থাকবে না। গাছ উধাও। তখন প্রাণীদের ক্যাপসুল খেয়ে বাঁচতে হবে। আর সে মানুষের দল তো মিউজিয়ামেই কবিতাকে খুঁজে পাবে। সে মানুষের দল কবিতার মধ্যে থাকতে ভুলেই যাবে। তবে এটাই স্বস্তি আমি বাঙালি জন্ম পেয়েছি, কবিতাকে বাংলায় পড়েছি, পড়ছি, পড়ব। যদিও অন্য ভাষার কাব্যরস আমায় আকৃষ্ট করে। তাই ভাষারস কখন যে উদ্ভিদ রস হয়ে ওঠে কখনও যে খেজুর রসের মিষ্টতা পাই, আবার কখন যে তা মহুয়ার মতো নেশা হয়ে যায় তা বুঝতেই পারি না। আর সেই নেশাই তো কবিতার উপত্যকায় পৌঁছে দেবে এই জীবনটাকে...
আস্থা আছে আজকে কালকের কথারা মন খারাপী
প্রকৃতির মাঝে তোমায় জড়িয়ে প্রেম, এভাবেই থাকি...