কবিতা কি ঘটনাবলী....এই যে আমি পথ চলি...শহরবাসীর পথ, সেই পথেও তো দেখা হয় কবিতার সাথে। প্রতিটি রাস্তার মাঝে মানুষ আর সেই মানুষের কথায় লুকিয়ে থাকা হাজার নাগরিকতার ইতিহাস। ইতিহাস নয় কলকাতার নানা বাস্তব প্রেক্ষাপট। কত সিনেমা হয়েছে নগরের...সে সব কথা তো আজও প্রযোজ্য...মৃণালবাবুর কলকাতা ট্রিলজি। নস্টাল করে দেয় আমায়। আজও আমার বাবার সেই যুগের প্যান্ট...শার্ট...সিগারেট...চাকরি পাওয়ার স্ট্রাগেলের কথা মনে করায়। আন্দোলনের সেই সব কথা। সেই নক্সাল মৃত্যু। মধ্যবিত্ত উদ্বাস্তু পরিবারের কষ্ট। পরে তারাই পার্টি থেকে বহিষ্কার। সে সব লুকগুলো যে কবিতা দেয় তা পরে কোথাও বলব। কিন্তু কবিতা দেয় আজও। সেই কলকাতা আর এই কলকাতা কী আলাদা। যুগের নিয়মে পরিবর্তন আসলেও রয়ে গেছে ধর্মটা একই। সোনার ধর্ম কি পাল্টায়! মৌলের ধর্ম পাল্টায় না। মৌল যে অনেকটা একলব্যের মতোই বিশ্বাসী জীবন।
.
মৃণাল বাবুর কলকাতার সেই পথ...জীবনের লড়াই...প্রেম...গান...অনবদ্য কিছু সিকোয়েন্স যেমন আমায় কবিতার কথা মনে করায়, আমিও শক্তি-সুনীলের কবিতার সাথে রিলেট করি সমাজকে। তাই কবিতারা একই থাকে। শুধু সময় পাল্টে যায়। বক্তব্য একটাই....ছবিগুলোর প্রতিটা ফ্রেমে জিয়া নস্টাল আছে। তাই কবিতার নস্টাল তো রথীন মিত্রের হ্যান্ড স্কেচেও বিদ্যমান। প্রতিবার বই মেলায় এখন নব্বই উর্দ্ধ মানুষটির চোখ দুটো আমায় কবিতা লিখতে শেখায়।
.
কবিতা আগেও যা বলেছে, আজও তাই বলে...
এভাবেই মস্কিষ্ক যাত্রার গ্রেমাটার পথ চলে।
.
কলকাতার কবিতারা তো সকলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে। থাকবেও। ছিলও। আসলে এখন হোক কলরব পরবর্তী যুগ। এখানে স্বাধীনতা এসেছে। তবে কবিতারা তার নিজস্ব পথ ধরেই চলবে। বাকি কবিতা সময়ের গহ্বরে...বিলীন হবে। আবার বিলীন হওয়ার আগে, নিয়মাবলীদের আঁকড়ে ধরবে। কেউ কেউ বলেন অনেক কবিতার ছন্দ দেখলে...তবে আমার ছন্দ আসবে। আমি তো প্রথমেই বলি কবি হওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই। তবে যা লিখি তা সমাজের অক্সিজেনরা লিখতে বলে। এই যে কবিতার দেশে আমি আছি। এ দেশ আমায় বলে...উপত্যকা খুঁজছ...। আমিও বলি হ্যাঁ। বলে এসো আমার সাথে...
.
দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতার মাঝেও মধ্য কলকাতা আছে। আছে ময়দানের ট্রাম, ইডেন গার্ডেন...বাগান প্যাগোডা। আছে রসদময় উত্তরের অলিগলি। ভাঙা ইঁট। কল দিয়ে টালার জল। অমৃত। দক্ষিণের পথে রঙিন শেড গুলো রামধনুর কবিতাদের খোঁজ দেয়। বারংবার। কেন জানি না। তারপর শহরতলি...বারুইপুর টু রাজারহাট...নতুন দুনিয়ার নায়কের খোঁজ দেয়। প্রাক্তন প্রেমগুলো ফিরে এলে যেতাম ওদের নিয়ে ঘুরতে। বেশ লাগতো কিন্তু...সে সব কবিতার স্তবকগুলো।
.
একদিন গেলুম। রেসকোর্সের সামনে। উড়ালপুলের নীচে। ছোট ছোট প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী বাচ্চাগুলোই রয়েছে। একটু বড় বা বয়স্করা রান্না করছে। কথা বললাম। জানলাম। শিশুরা মিড ডে মিলের জন্য স্কুলে যায়। শিখতেও চায় অনেক কিছু। কিন্তু তাদেরর মায়েরা শরীর বিক্রি করে...বাবারা পকেটমার, রাতে নেশা। এটুকু বললেও কবিতা হত। কিন্তু পরের বিষয়টা আরও কঠিন। এই বাচ্চারা রেসের মাঠে কাগজ বিক্রি করে। কিছু টাকার জন্য। তাদেরও পয়সা চাই। এই অবস্থাগুলো আমার আত্মাকে পোড়ায়। বলে এ কলকাতা আমায় আর কবিতা দিও না।
.
এ যীশুরা শুধু টাকার গন্ধে পেল না রবি ঠাকুরের স্বাদ,
আমি দাঁড়িয়ে আছি সামনে আহ্বান করে মৃত্যুর খাদ।
.
এই অজানা গল্পরাই আমার কবিতা হয়। এই চেতনারা আমার কবিতা বাসা বেধে...প্রবহমান কাল ধরে এগিয়ে চলে....আর আমরা শিক্ষিত নারীপুরুষ বলি...কলকাতার সবকিছু দেখেছি। সব দেখোনি...সব মাখনি...কেও সবটুকু এক জীবনে দেখতে পারে না....আলোকবর্ষ দূরত্ব তাই আগুন লাগা নাগপুর থেকে উত্তরাঞ্চলের দাবানল, পার্কস্ট্রিট থেকে কামদুনি হয়ে সল্টলেকের বারবিকিউ....আজ আবার যাচ্ছেন নাকি বারবিকিউতে সিলফি দেবেন আমি সে সব নিজস্বীদের নিজস্ব করে কবিতা লিখব...