এক্ষুনি বাসে একটি ছোট্ট মেয়ে
নয় দশ বছরের, গান শুনিয়ে টাকা চাইল।
একটু আগে ফুচকা খাচ্ছিলাম,
একটি মেয়ে এসে বলল
আমাকে চাল কিনে দেবে।
লজ্জা নেই, ভয় নেই চাইছে।
কারণ এটাই ভারতবর্ষ।
এটাই আমাদের দেশ।
এসব টুকরো ক্রুদ্ধ চাঁদগুলো
জ্যোৎস্নার মতো লিখে ছড়িয়ে দিলে
কবিতা হয়ে ওঠে ডায়াসে।
আমরা কবিতা লেখার কথা ভাবি
অথচ আমার ভারত, আমার মা
আমাদের নারীদের চোখের জল
একবারের জন্যও অনুভব করি না।
দূরে সরে যাই নিজেদের পরিবারের আনন্দে
ছন্দে গন্ধে মেখে নিই নিজেদের ছড়া।
ছড়ার মাঝে এক টুকরো হাসিতে রাস্তার শিশুটা
বড়দিনের আগে যীশু হয়ে ওঠে।
আচ্ছা যীশুর কথা ভাবনায় আসলে
মাদার টেরেসা চুপ করে থাকবে কেন!
ঐ মেয়ে দুটির ভিতর মাদার টেরেসা লুকিয়ে নেই!
কবিতা লুকিয়ে নেই নিস্বার্থ দানের ভিতর,
মানব জীবন তো গুছিয়ে রাখা সংসার নয়
নাট্যমঞ্চের আলো আঁধারি নয়
জীবন চাইছে অনেক বেশি কিছু,
আমরা কবিতা লিখতে পারছি না,
কবিতা নেই, কবিতা হবে, কবিতা লিখছি
কবিতা উৎসব এই করেই আরও কয়েকশো বছর
কাটিয়ে দেবো নন্দন চত্বরের এদিক ওদিক।
এক বার আমার চারপাশে ক্ষুধার্ত ভারতবর্ষকে
চোখ মেলে দেখব না,
উলঙ্গ যীশু নয় দাঁড়িয়ে রয়েছে
উলঙ্গ কালী।
কয়েকটা টাকা কয়েক মুঠো চাল চাইলে
দেবো না ওদের।
ডেনড্রাইট খায়,
ওদের অর্জিত টাকা তাদের দলে ভাগ করে দিতে হয়
এসব বলে ভারতবর্ষ নিয়ে প্রবন্ধ লিখব
আর কখন কংগ্রেস কখন বিজেপি
বামপন্থার মৃত্যু এসব বলে ঝড় তুলব।
আমরা এড়িয়ে যাই বলেই
কবিতাও এড়িয়ে যায়,
ভারতবর্ষ লাভার আগুনে জ্বলছে,
বাংলা পুড়ছে প্রতি মুহূর্ত
দুঃশাসনে।
চুপ করে থাকলে কবিতা আসবে না,
চুপ করে ওয়েবসিরিজ দেখলে
কবিতা আসে না।
চিৎকার করতে হয়,
দূরে আরবানার জোনাকী দেখতে দেখতে
কাঁদতে হয় চেঁচিয়ে।
আমাদের মেয়েরা কাঁদছে
ভারতবর্ষ কাঁদছে
আমার মা বড্ড অসহায়,
অসহায়,
বড্ড অসহায়।