কিছু পেয়ারা, বীটলবণ আর কয়েকটা পাতিলেবু
মধুমেহ রোগ হওয়ার আগে
যৌবনের বাবার মুখটা ভেসে ওঠে।
টিউশন ক্লাসে দেশপ্রিয় পার্কের কাছে যেতে যেতে
এসব ভিড় করে আছে জীবনানন্দের কবিতার পাশেই।
ধূসর পান্ডুলিপি পেরিয়ে
আট বছর পরের লাশে এসে
থমকে না দাঁড়িয়ে
লেক মার্কেটের সামনে ট্রাম দেখছি।
এখন শপিং মল,
আগের আর্থিক অভাবের চোখ
সেই অভিশপ্ত ট্রাম নেই।
জীবনানন্দের কবিতাও বুঝতে অসুবিধা হয়,
আমরাও সময়ের শিকার,
নীরবে, নিস্তব্ধতায় শেষ করছি
নিজের ভিতর বেঁচে থাকা রবীন্দ্রনাথকে।
এটুকু বুঝি মেধার দাম নেই
যদি না ঠিক সময় নিজের দাবার চাল
সাজিয়ে গুছিয়ে দিতে পারি।
জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে।
মেধা নয়, কিছু চতুর বুদ্ধি গিলে খাচ্ছে
চাকরির ভবিষ্যৎকে।
ফিরছি। পরীক্ষা শেষে মেট্রোতে এখন অনেক ভিড়।
কিসের পরীক্ষা দিচ্ছি! মানুষ হওয়ার না টাকা রোজগারের।
আমরা শিকার হচ্ছি, প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত।
সামনে একজন দাঁড়িয়ে,
সাদা ধুতি, সাদা পাঞ্জাবি।
হাসছে আমায় দেখে।
এখন আমি বুঝতে পারছি জীবনানন্দকে,
পরাবাস্তবতাকে।
ওঁনার মেধাচেতনাকে সময় বোঝেনি,
আমি কিন্তু শিকার হবো না,
স্টেথো হাতে ডাক্তার হবই,
মানুষের জন্য কাজ করতেই হবে,
শুধু টাকা রোজগার আমার লক্ষ্য নয়।
কোনদিন সে সব নিয়ে ভাবিনি।
মনস্থির ছোটবেলাতেই করেছি
বাবার মধুমেহ রোগের চাপ
বুঝতে পেরেছি।
দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে নেমে তাঁকে আর দেখতে পেলাম না।
কে জানে কোন হরিণ, কোন পিকনিক স্পট
আমার স্বপ্ন তার ইংরেজি অনার্স
অর্থাভাবকে শিকার করেছে।