অকাল-সন্ধ্যা
(শ্রদ্ধেয় কবি ঁ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্মরণে)
@ সোমদেব চট্টোপাধ্যায়
মৌষল পর্বের কথা অনেক কবিরাই লিখেছেন
লিখেছেন ঠিক, তাতে তেমন ভুলও নেই তত
সেদিনের সেই সন্ধ্যায় আমি সত্যই পরাজিত
মানছি আমার অহংকারও সীমাহীন বার বার
কিন্তু ভুলো না কৃষ্ণ, আমি পাঞ্চালি জয়ী বীর
আমার প্রতি চিরকালই তার পক্ষপাতীত্ব
যেখানেই থাকো, ভুলো না আমিই উজ্জ্বলতম
এই প্রৌঢ়ত্বেও ছুটে গিয়েছি তোমার দ্বারকায়
অনায়াসে পার করেছি পাহাড়, তপ্ত বালুপথ
বিধবা যাদব নারীকুল ছিল আমারই সুরক্ষায়
অথচ পঞ্চনদের তীরের এক বিশ্রাম সন্ধ্যায়
আচমকা যেই হানা দিল সেই আভীর দস্যুদল
রণহুঙ্কার দিয়েছিলাম, কিন্তু তার পর.... তারপর
আমি ক্রমে অশক্ত ক্রমে বিস্মৃত রণ কৌশল
এবং গান্ডীব জ্যা-রোপণে অসমর্থ ক্ষণকাল
হতে পারি আমি অর্জুন, কেবল এক উপলক্ষ
কিন্তু শোনো, তারও ইচ্ছা অনিচ্ছা কিছু ছিল
অস্থির প্রেম ন্যায় অন্যায় তারও অভিপ্রায়
তাই বলে যা লজ্জার হবে সে কেমন পরাজয় !
মানছি ক'জন নারী সেদিন সত্যই লুন্ঠিতা
কিন্তু বাকি দশসহস্রাধিক, তাদের গমন স্বেচ্ছায়
যাদের জন্য যুদ্ধ তারাই পরাজিত করে যায় !
অর্জুন নয়, সেই দস্যুদেরই প্রেমিক বলে বেছে
আঁধার বনের পথে তারা দল বেঁধে চলে গেছে
বক্ষলগ্না সেই সব নারীদের নীরব সাক্ষী ছিলাম
ধনুকের ছিলায় তাই আর টান দিতে পারিনি
সেদিনের সন্ধ্যায় সত্বর পরাজিত হয়েছিলাম ....